Food Bank: নদিয়ার শান্তিপুরের কাওসার আলি ছোটবেলায় খিদের জ্বালা ভোলেননি। আর জানেন পেটের জ্বালা কী জিনিস। সেই অসুবিধা যাতে আর কাউকে না ভোগ করতে হয়, তাই নিজের জন্মভূমিতে বানালেন ফুড ব্যাঙ্ক।
তিনি উপার্জনের বেশিরভাগ ব্যয় করেন অনাহারীদের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন। প্রতিদিন ৫০ জনের খাবারের পাকাপাকি ব্যবস্থা করলেন। শনিবার নিজের জমিতে বানালেন খাদ্য ব্যাঙ্ক। উদ্বোধনে পৌঁছালেন শান্তিপুর থানার ওসি।
কাউসার আলিকে প্রতিবেশীরা সকলে মিন্টু বলে চেনেন! আট থেকে আশি সকলেই তার বন্ধু। হাত পাতার আগেই সহযোগিতা পৌঁছে যায় বাড়িতে। কাজের সুবাদে বাড়িতে থাকলেও এলাকার ছোটবেলার বন্ধুদের টাকা পাঠানোর মাধ্যমে দীর্ঘ লকডাউনে অনাহারী মানুষের সহযোগিতা পৌঁছেছিল রাতের অন্ধকারে।
প্রচার থেকে দূরে থাকেন। তবে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে এবং এ কাজে এগিয়ে আসার জন্য অন্যদের অনুপ্রেরণা যোগাতে এলাকাবাসীর দাবি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
কাওসার আলি একসময় মাহিনের স্বর্ণশিল্পী ছিলেন। বর্তমানে পেশায় সোনা-রূপোর সফল ব্যবসায়ী। হায়দ্রাবাদে নিজস্ব বাড়ি দোকান এবং নিজের জন্মভূমি শান্তিপুর এবং হায়দ্রাবাদের ৬০ জনের কর্মসংস্থান করেছেন তিনি।
হঠাৎ এ কাজ কেন? উদ্দেশ্য কী? সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সে উত্তর সময় বলবে। স্বার্থপরের দুনিয়ায় আমরা সব কিছুতেই কারণ খুঁজি! তবে রাজনীতিকে ঘৃণা করি। আর ব্যবসার পরিধি পসার সবকিছু হায়দ্রাবাদে! তা হলে এখানে লক্ষ লক্ষ টাকা এখানে খরচ না করে হায়দ্রাবাদে করলেই তো হত।
অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, একসময় পেটের খিদে কী তা বুঝেছিলাম কম উপার্জন পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। অর্থের অভাবে পড়াশোনা না করতে পেরে উপার্জনের উদ্দেশ্যে মাত্র ১৬ বছর বয়সে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলাম কাজের খোঁজে। কঠোর পরিশ্রম সততা এবং মানুষকে আপন করে নেওয়ার জন্যই হয় তো আজ এই সাফল্য।
তিনি জানান, আগামী সময় স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং অনাথদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে চাই। ভাল কাজ করলে অনেকেই পাশে পাওয়া যায়।
কাওসার আলির পিতা আজাদ আলি বিশ্বাস জানান, সকলের শরীর মাথা একই রকম হওয়া সত্ত্বেও কেউ রোজগার করেন ৫ হাজার কেু ৫০ হাজার টাকা। আসলে সে রোজগার করছে না, উপরওয়ালা ওর মাধ্যমে গরীব মানুষের কাছে পাঠাচ্ছে, এটা বোঝে না অনেকেই, ও আমার ছেলে হিসেবে বুঝেছে এর জন্য আমি বাবা হিসেবে গর্বিত।
গ্রামের মহিলা,পুরুষ, প্রবীণ, শিশু সকলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিবিড়। আজ সারাদিন হইহুল্লোড় করে কাটাতে দেখা গেল তাকে। বন্ধুরা জানালেন, এবার থেকে অফিসে বসে কুপন বিলির মাধ্যমে নিয়মিত দুপুরে খাবার পরিবেশন করা হবে।
আর একটি কাজ সেরে ফেলেছেন তিনি। আর তা হল একজন হিন্দু এবং একজন মুসলিম মহিলাকে নিযুক্ত করা হয়েছে রান্নার কাজে।