'যা হয়েছে, ভালই হয়েছে,' এমনটাই বলছেন চোপড়ার নির্যাতিত যুবক। গত রবিবার প্রকাশ্যে এক যুবক ও এক যুবতীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়। ঘটনায় অভিযুক্ত তাজিমুল ওরফে জেসিবি-র কঠোর শাস্তির দাবি উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে কার্যত ইউ-টার্ন নিলেন চোপড়ার নিগৃহীত যুবক। সালিশি সভার শাস্তিই তিনি মাথা পেতে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে।
ইন্ডিয়া টুডে টিভি সেই যুবকের সঙ্গে কথা বলে। এখনও আতঙ্কের রেশ কাটেনি ওই যুবকের। সারা গায়ে যন্ত্রণা-ব্যথা। কিন্তু এরপরেও তিনি জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার তাঁর কোন ইচ্ছা নেই। তিনি আরও জানান যে, তিনি গ্রামের সালিশি সভার শাস্তি গ্রহণ করেছেন।
'যা হয়েছে তা ভালই হয়েছে। এখন সবকিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে এবং আমরা শান্তিতে আছি। আমি আমার বাড়িতেই আছি। আমি আমার জীবনে আর কোনও ঝামেলা চাই না,' ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন ওই ব্যক্তি।
কিন্তু কেন? এভাবে নির্মম মারধরের পরেও তিনি এটা মেনে নেবেন? এর জবাবে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও ওই মহিলাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য তিনি নিজেকে দোষী বোধ করেছিলেন।
'মহিলাকে বাড়িতে এনে আমি ভুল করেছি,' বলছেন যুবক। 'সালিশি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, শাস্তি হিসেবে আমাদের দু'জনকে প্রকাশ্যে রাস্তায় মারা হবে। আমরা তা মেনে নিয়েছি।'
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, 'আমি সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মার খেতে রাজি হয়েছি। ফলস্বরূপ, সালিশি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছোট শাস্তি হিসাবে আমি প্রকাশ্যে মার খেতে চেয়েছিলাম। অভিযুক্ত টিএমসি নেতার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। আমি শুধু এখন শান্তিতে থাকতে চাই।'
ওই ব্যক্তি জানান, 'অবৈধ সম্পর্ক' করাটা তাঁদের জাতে একটি অপরাধ। শাস্তিটা গ্রামের মিটিংয়েই স্থির করা হয়েছিল।
এদিকে যে মহিলাকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে, তিনিও এই ঘটনায় ভিডিও তোলা ব্যক্তির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছেন। তাঁর অনুমতি ছাড়া ভিডিও তোলা ও তাই ভাইরাল করার জন্য সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের দাবি করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, আলোচ্য ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি যুবক-যুবতীকে রাস্তায় ফেলে মারছে। কখনও লাঠির গোছা, কখনও চলছে লাথি। আশেপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ। পরে জানা যায়, মারধরে অভিযুক্ত বিশালাকায় ব্যক্তির নাম তাজিমুল, ওরফে জেসিবি। পরকীয়ার অভিযোগে ওই যুবক-যুবতীকে 'শাস্তি' দিচ্ছিল জেসিবি। এরপরেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে জেসিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, অভিযুক্ত জেসিবি তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের ঘনিষ্ঠ। যদিও হামিদুল নিজে তা অস্বীকার করেন।