রাজ্যজুড়ে চলছে তৃণমূলের 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচি। আর সেই কর্মসূচিতে গিয়ে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভে মুখে পড়েছেন তৃণমূলের বিভিন্ন নেতানেত্রী। এবার সেই বিষয়ে মুখ খুললেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে তৃণমূল নেত্রী বলেন, দিদির সুরক্ষা কবচ তারই প্রকল্প। একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'সমস্যা থাকলে নিশ্চয়ই বলবেন। কিন্তু কুৎসায় কান দেবেন না'। একইসঙ্গে দলের নেতা কর্মীদের প্রতি নেত্রীর বার্তা, "লোভ করবেন না। এক-দুজন খারাপ। সবাই নয়। কেউ ভুল করে থাকলে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। কেউ কারও কাছ থেকে কিছু নিয়ে থাকলে তাঁকে তা ফিরিয়ে দিন"।
প্রসঙ্গত, সামনেই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর এই পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে বাংলায় ১০ কোটি মানুষের সমস্যার কথা জানতে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচি ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে জানানো হয়, এই কর্মসূচি রূপায়ণের দায়িত্বে থাকবেন 'দিদির দূত'রা। আর ওই 'দূত' হিসাবে দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং নেতানেত্রীদেরই দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু কর্মসূচির প্রথম দিন থেকেই শুরু হয় সমস্যা। মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় 'দিদির দূত'দের। বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে, কুণাল ঘোষ, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শতাব্দী রায়, লাভলি মৈত্র, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতানেত্রীদের। এমনকী গত শনিবারেই উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে অভিযোগ জানাতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীর হাতে চড় খেতে হয় স্থানীয় এক বাসিন্দাকেও। পরে জানা যায় তিনি বিজেপির একজন নেতাও।
তবে তাঁর 'দূত'রা বিক্ষোভের মুখে পড়লেও এতদিন এই বিষয় নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি 'দিদি', অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সোমবার মুখ খোলেন তিনি। মমতা বলেন, "এটা আমারই প্রকল্প। আপনার সমস্যা থাকলে নিশ্চয়ই বলবেন। সমস্যা তো থাকেই। তবে কারও কথা শুনে কুৎসা-অপপ্রচারে কান দেবেন না"। সেক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রী এখানে কুৎসা ও অপপ্রচারের কথা বললেও রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছেন, ১১ বছর সরকার চালানোর পরেও রাজ্যবাসীর যে এখনও সমস্যা রয়েছে, সেকথা কার্যত নিজেই স্বীকার করে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন - 'চড় মারলে আপনারাও চার-পাঁচটা দিন', দলীয় কর্মীদের নির্দেশ লকেটের