শহর কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে পড়েছে জাঁকিয়ে শীত। আর শীতকাল মানেই মিঠে রোদ পিঠে মেখে ঘোরাফেরা, খাওয়া দাওয়া। এদিকে ইতিমধ্যেই আবার চলে এসেছে ফেস্টিভ সিসন। সামনেই বড়দিন (Christmas)। তারপর নতুন বছর (New Year 2022)। তাই সেই উপলক্ষ্যে প্রায় সকলেই এখন গা ভাসিয়েছেন উৎসবের আনন্দে। আর এই উৎসবের মাঝে পিকনিক হবে না তা কি হয়? মোটামুটি সারা শীতকাল জুড়েই বিভিন্ন পিকনিক স্পটে ভিড় থাকলেও, রবিবার ও অন্যান্য ছুটির দিনগুলিতে তা অনেকটাই বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে জনপ্রিয় পিকনিক স্পটগুলিতে ভিড় তো থাকেই, তাছাড়া কেউ কেউ আবার অফবিট স্পটেরও খোঁজ করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কলকাতার কাছাকাছি এমনই কিছু চেনা-অচেনা পিকনিক স্পটের ঠিকানা।
বাওয়ালি রাজবাড়ি - কলকাতা থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বাওয়ালি রাজবাড়ি। বন্ধুবান্ধব-পরিবার নিয়ে এখানে অনায়াসেই একটাদিন পিকনিক করতে পারেন। আর যদি ইচ্ছা হয়, তাহলে রাত্রিযাপনেরও ব্যবস্থা আছে। তাছাড়াও এখানে রয়েছে একটি ফার্মহাউস। যেখানে চাইলে আপনি উইকএন্ডও কাটাতে পারেন।
বাবুর হাট - উত্তর ২৪ পরগনার এই পিকনিক স্পটটির দূরত্ব কলকাতা থেকে ৪৮ কিলোমিটার। এখানে আপনি পেয়ে যাবেন বড় ধানের জমি, পুকুর। ইট কাট পথরের জঙ্গল থেকে নিরিবিলি এই পরিবেশে একটাবেলা কাটাতে মন্দ লাগবে না। তার সঙ্গে স্থানীয় মানুষদের আন্তরিক ব্যবহারও আপানাকে মুগ্ধ করবে।
টাকি - শীতকালে পিকনিকের অন্যতম জনপ্রিয় জায়গা টাকি। কলকাতা থেকে দূরত্ব মাত্র ৬৭ কিলোমিটার। তাছাড়া ট্রেনপথেও এখানে পৌঁছানো যায়। আর টাকি গেলে নৌকা করে ইছামতীর জলে একবার ভেসে নিতে ভুলবেন না। টাকির খুব কাছেই কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশকেও কাছ থেকে দেখার সুযোগ রয়েছে এখানে।
মাছরাঙা দ্বীপ - কলকাতা থেকে এই জায়গাটির দূরত্ব ১১৩ কিলোমিটার। টাকি বা হাসনাবাদ থেকে নৌকায় করে পৌঁছাতে হয় দ্বীপে। এখানে আপনি পেয়ে যাবেন প্রচুর মাছরাঙা পাখি। এই দ্বীপের খুব কাছেই বাংলাদেশ।
পারমাদান - এই জায়গাটি পিকনিক করার জন্য একেবারে উপযুক্ত। কলকাতা থেকে পারমাদানের দূরত্ব ১০৩ কিলোমিটার। এখানে রয়েছে বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য। তাছাড়া এখানে গেলে কাছাকাছির মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্তটাও ঘুরে দেখে নিতে পারেন।
রায়চক - কলকাতার কাছে আরও এক জনপ্রিয় পিকনিক স্পট রায়চক। মহানগরী থেকে রায়চকের দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। হুগলি নদীর তীরে এই জায়গায় পিকনিক করতে গেলে আপনার মন ভাল হয়ে যাবেই। সঙ্গে নদীর ধারের মুক্ত বাতাসও বুক ভর নিয়ে নেবেন বেশখানিকটা।
ফলতা - দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই জায়গার দূরত্ব শহর কলকাতা থেকে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার। এখানে নদীর ধারে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের দৃশ্য আপনার মনের মণিকোঠায় চিরকাল থেকে যাবে। মনে করলে ফলতাকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পিকনিক স্পট হিসেবে।
ডায়মন্ডহারবার - কলকাতা থেকে ডায়মন্ডহারবারের দূরত্ব প্রায় ৫৮ কিলোমিটার। এটিও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই অবস্থিত। নদীর ধারে রান্নাবান্না-খাওয়াদাওয়া করে কোথা দিয়ে যে একটা দিন কেটে যাবে তা আপনি বুঝতেই পারবেন না।
পিয়ালী দ্বীপ - সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার হল পিয়ালী দ্বীপ। কলকাতা থেকে এই জায়গার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। পিয়ালী দ্বীপের খুব কাছেই সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প। তাই চাইলে হই হই করে সারাদিন কাটানোর মাঝে একবার 'বাঘমামা'র দর্শনও করে আসতে পারেন।
চুঁচুড়া - পিকনিকের আরও একটি গন্তব্য হতে পারে হুগলি জেলার চুঁচুড়া। এখানে পিকনিকের জন্য বেশকিছু পার্ক আছে। তাছাড়া পিকনিকের পাশাপাশি এখানে এসে ঘুরে নিতে পারেন ব্যান্ডেল চার্চ, ইমামবাড়া, হংশেশ্বরী মন্দিরের মতো জায়গাগুলিও, যা হবে আপনার বাড়তি পাওনা।
দেউলটি - হাওড়ার এই জায়গাটিতে গিয়েছেন কখনও? কলকাতা থেকে এই জায়গার দূরত্ব ৬৩ কিলোমিটার। এখানে রয়েছে একটি ফার্ম হাউস, যেখানে আপনি বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়দের নিয়ে পিকনিক করতে পারেন। তাছাড়া কাছাকাছির মধ্যে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িটিও ঘুরে দেখে নিতে পারেন।
গাদিয়ারা - হাওড়া জেলার আরও একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট গাদিয়ারা। কলকাতা থেকে এখানকার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। তাছাড়া দক্ষিণপূর্ব রেলপথের মাধ্যমেও এখানে পৌঁছান যায়। এখানে নদীর ধারে একটা বেলা পিকনিক করে কাটালে আপনার মন্দ লাগবে না।
আরও পড়ুন - ক্রিসমাস, বর্ষশেষের ছোট ছুটি, মাত্র ৫ হাজার টাকায় ঘুরে নিন বাংলার এই জায়গাগুলি