এবার তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ালেন আসানসোল পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের চেয়ারম্যান ও তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি লিখে জানান, আসানসোল পুরসভা রাজ্যের বঞ্চনার শিকার। চিঠিতে জিতেন্দ্র তিওয়ারি লেখেন, কেন্দ্রীয় সরকার স্মার্ট সিটি প্রকল্পে মোননীত করেছিল আসানসোলকে। কিন্তু রাজ্য সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ২ হাজার কোটি টাকা পায়নি আসানসোল পুরসভা।
আসানসোলের পুরপ্রশাসক চিঠি লিখে পুরমন্ত্রীকে জানালেন, রাজ্যের কারণেই পাওয়া যায়নি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অনুদান। বঞ্চিত হতে হয়েছে স্মার্ট সিটির জন্য বরাদ্দ ২ হাজার কোটি টাকা থেকেও। তারপরেই রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে রানিগঞ্জ গার্লস কলেজ ও রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজের গভর্নিং বডি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি চিঠিতে লিখেছেন, "আসানসোলের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে এবং নগর ও স্থানীয় সংস্থার চেয়ারম্যান মেয়র ও প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করেছি। প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার তহবিল কেন্দ্রীয় সাহায্য পাওয়া যেত। শহরের উন্নয়নের জন্য। প্রচুর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ আসানসোলকে এই প্রকল্পের আওতায় বেছে নেওয়া হয়েছিল তবে রাজনৈতিক কারণে আমাদের এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে দেওয়া হয়নি রাজ্য সরকারের তরফে।"
তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই ওই প্রকল্পের সুবিধা পায়নি আসানসোল। এমনকী তিনি আরও লেখেন, রাজ্য পুরমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিলেও উন্নয়নের টাকা মেলেনি। এই ঘটনায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ''এ তো ভূতের মুখে রাম নাম। কল্পনাও করা যায় না সরকারের বিরুদ্ধে তাদের দলের লোকই কথা বলবে। ঘটনা হয়তো সত্য। আমার ঠিক জানা নেই। এতদিন জানতাম অন্য দল দ্বারা পরিচালিত পুরসভা বা মিউনিসিপ্যালিটিতে এই সমস্যা রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের মেয়র তাদেরই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছে এটা আশ্চর্যজনক।''
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ''কেন্দ্র প্রোপাগান্ডা করে ২০০০ কোটি, ৫০০ কোটি এরকম। কিন্তু স্মার্ট সিটি প্রকল্পে ৫০ শতাংশ রাজ্যকে দিতে হয়। জিতেন আমার সঙ্গে এটা নিয়ে কখনও কথা বলেনি। আজকে কেন চিঠি দিয়েছে জানি না। ওর সঙ্গে আমার অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক। বহুবার কথা হয়েছে কিন্তু এটা নিয়ে কখনও কিছু বলেনি। রাজ্য সরকারের সীমিত বাজেট। আমরা ১-২ টো সিটির উন্নয়ন করব নাকি ১২৭টি পুরসভাকে দেখব।''
জিতেন্দ্রর চিঠি দেওয়াকে ভালভাবে নিচ্ছেন না ফিরহাদ। তাঁর মন্তব্য, বিধায়ক হিসাবে কারও পলিসিতে পরিবর্তনের কথা মনে হলে সরাসরি কথা বলবে। কেন চিঠি দেবে? আরও একধাপ এগিয়ে পুরমন্ত্রীর কটাক্ষ, ''কেউ যদি মনে করে তাহলে সে চলে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো জানিয়েছেন, দরজা সবার জন্য খোলা।''