চাঁদে জল পাওয়া গিয়েছে। তবে পৃথিবীর মতো সেখানকার জলে স্রোত নেই। এটি অন্ধকার অংশে থাকা গর্তগুলিতে জমাট বরফের মধ্যে অথবা হাইড্রেটেড পাথরে রয়েছে। এটি ভারতের চন্দ্রযান-১ এবং আমেরিকার LRO দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু এখন চিনের Chang'E-5 Lunar Lander জলের সন্ধান পেয়েছে। এর পাশাপাশি এর উৎসও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। বেশির ভাগ জলই চাঁদের ভিতরে রয়েছে।
নেচার কমিউনিকেশনস (Nature Communications ) জার্নালে চিন এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশ করেছে। চিনের Chang'E-5 Lunar Lander হল প্রথম গবেষণাগার যেটি চাঁদে থাকাকালীন জল আবিষ্কার করেছে। চন্দ্রযান-১ বা LRO চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার সময় জল আবিষ্কার করেছে। অন্যদিকে Chang'E-5 Lunar Lander চাঁদের সেই জায়গায় রয়েছে, যেখানে আজ পর্যন্ত অন্য কোনও ল্যান্ডার বা রোভার যায়নি।
Chang'e-5 Lunar Lander থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চাঁদে জল হাইড্রক্সিল গ্রুপের আকারে রয়েছে। অর্থাৎ হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের পরমাণু নিজেদের মধ্যে আটকে রয়েছে। এটি জলের জন্য সবচেয়ে সাধারণ রাসায়নিক প্রক্রিয়া। চিনা বিজ্ঞানীরা জলের ফোঁটা না পেলেও পাথরে রাসায়নিক মিশ্রণ পেয়েছেন। Chang'E-5 Lunar Lander বর্তমানে চাঁদের ওশেনাস প্রসেলারাম (Oceanus Procellarum) অর্থাৎ ঝড়ের মহাসাগরে রয়েছে।
Oceanus Procellarum-এ হাইড্রক্সিলের পরিমাণ প্রতি মিলিয়নে ৩০ অংশ। চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেশনের বিজ্ঞানী তথা এই রিপোর্টের লেখক লি চুনলাই তার বিবৃতিতে বলেছেন, পৃথিবীতে তাঁরাই প্রথম চাঁদ থেকে আনা নমুনা পরীক্ষা করেছেন। Chang'E-5 Lunar Lander-এর তথ্যও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। উভয় তথ্যই বলছে যে চাঁদে জল রয়েছে। তবে সেখানকার জলের রূপ অন্যরকম।
লি চুনলাই আরও জানান যে, এই সময় চাঁদে সৌর বাতাসের গতি কম। ক্রমাগত আসা সৌর বায়ুর কারণে, চাঁদে হাইড্রক্সিলও তৈরি হতে পারে। এই জিনিসটি কয়েক দশক ধরে পরিচিত ছিল তবে Chang'E-5 Lunar Lander নিশ্চিত করেছে যে চাঁদে উপস্থিত জল সে সেটির পৃষ্ঠের নিচ থেকে বেরিয়ে আসা পাথরগুলিতে রয়েছে।
লি বলেন, চাঁদের পাথর নিয়ে গবেষণা করে তাঁরা চাঁদ, সেটির উৎপত্তি এবং রাসায়নিক মিশ্রণ সম্পর্কে তথ্য পাচ্ছেন। Changi-6 এবং Chang-7 এই বিষয়টিকে আরও নিশ্চিত করবে। হয়তো ভবিষ্যতে মানুষ চাঁদে জলের জন্য আর আকুল হবেন না।
আরও পড়ুন - একবালপুরে ফ্ল্যাটে দুটি ঝুলন্ত দেহ, মৃত্যু ঘিরে রহস্য