৪ সপ্তাহ ধরে লকডাউন জারি রয়েছে চিনের সাংহাইয়ে। আর তার জেরে বেজায় বিপাকে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, কর্মব্যস্ত এই শহরে এখন শ্মশানের নীরবতা। টানা লকডাউনের জেরে চিনা সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসছে সেখানকার মানুষ। তাদের অভিযোগ, সাধারণ পরিষেবাও মিলছে না। ওষুধ, খাবার, শিশুদের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা যাচ্ছে না। ফলে চরম অসন্তুষ্ট এখন সেই শহরের মানুষ।
জানা গেছে, লকডাউনের কারণে ঘরেবন্দি মানুষের সমস্যা আরও বেড়েছে। কারণ, জিনিসপত্রের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কুরিয়ার কোম্পানিগুলো চাহিদা অনুযায়ী ডেলিভারি দিতে পারছে না। সুপার মার্কেট থেকে সবজি, চাল, তেল, নুডলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে অনলাইনে খাবারের দোকানগুলো পণ্যের অভাবে ডেলিভারি দিচ্ছে না।
চিনের শুধু সাংহাই নয়, বেইজিংয়েও কোভিডের নতুন ঢেউ নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। এই দুই শহরের পাশাপাশি অন্য এলাকার মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে কোটি কোটি মানুষের করোনা টেস্ট হবে।
আরও পড়ুুন : WhatsApp : একাধিক ডিভাইসে WhatsAap খোলা, কীভাবে বন্ধ করবেন? জানুন
শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় সাংহাইয়ে ১৯ হাজারের বেশি নতুন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ জন। সাংহাইতে ২৫ মিলিয়নেরও বেশি লোক বাস করে, যাদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেইজিংয়ের মোট জনসংখ্যা ২০ মিলিয়নেরও বেশি। করোনা পরীক্ষা নিয়ে পদক্ষেপ শুরু হওয়ায় সেখানেও মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। ফলে সেখানকার মানুষ আতঙ্কে কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছে। এই কারণে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষের আশঙ্কা, সাংহাইয়ের মতো বেইজিংয়েও কঠোর লকডাউন হতে পারে।
ভারতেও ১২ রাজ্যে ব্যাপক হারে বাড়ছে করোনা। তালিকায় রয়েছে বাংলাও। রাজ্যে গত সপ্তাহে ৬৬ শতাংশ বেড়েছে করোনা রোগীর সংখ্যা। দেশজুড়ে গত এক সপ্তাহে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এমন ১২টি রাজ্য রয়েছে, যেখানে করোনার সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক জায়গা।
বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার ০.৮৪ শতাংশ। একই সময়ে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫২২। দেশে কী হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তা এক পরিসংখ্যান থেকেই অনুমান করা যায়। গত ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে, ১৫ হাজার ৭০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তার আগের সপ্তাহে মাত্র ৮০৫০ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছিল। কিন্তু বর্তমানে যে সংখ্যা বেড়েছে তা প্রায় ৯৫ শতাংশ।