scorecardresearch
 

Ritwick Chakraborty on NABC 2023: 'আসছে বছর আবার হবে...', বঙ্গ সম্মেলন নিয়ে প্রতিবাদী শিল্পীদের কটাক্ষ ঋত্বিকের

Ritwick Chakraborty on NABC 2023: ধিক্কার জানিয়ে বঙ্গ সম্মেলন বয়কটের ডাক দিয়েছেন বাংলার অন্যান্য শিল্পীরা। ইতিমধ্যে ভাইরাল সেই প্রতিবাদপত্র। এবার এই প্রতিবাদককেই কটাক্ষ করলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।

Advertisement
অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী (ছবি: ফেসবুক) অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী (ছবি: ফেসবুক)

আলোচনায় এবছরের বঙ্গ সম্মেলন (Banga Sammelon)। প্রতি বছরই কলকাতার বা বাংলাদেশের বাঙালি শিল্পীরা সেখানে পৌঁছায়। এবছর ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই আয়োজন করা হয়েছিল বঙ্গ সম্মেলন। তবে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয় শিল্পীদের। চূড়ান্ত অব‌্যবস্থা ও হেনস্থার অভিযোগ তোলেন সেখানে উপস্থিত শিল্পীরা। ধিক্কার জানিয়ে বঙ্গ সম্মেলন বয়কটের (Boycott NABC) ডাক দিয়েছেন বাংলার অন্যান্য শিল্পীরা। ইতিমধ্যে ভাইরাল সেই প্রতিবাদপত্র। এবার এই প্রতিবাদককেই কটাক্ষ করলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী (Ritwick Chakraborty)। নিজের কথা বলা পুতুলের মাধ্যমে, নাম না করে মনের ভাব প্রকাশ করলেন অভিনেতা।

ঋত্বিকের কথা বলা পুতুল তাঁকে জিজ্ঞেস করে, "ব্যঙ্গ সম্মেলন কোথায় হয় বদ্দা?" উত্তরে অভিনেতা বলেন এখানে। একথা শুনে পুতুলের  বক্তব্য, "ও, আমরা করলে দোষ নেই, নর্থ আমেরিকায় হলেই দোষ!" ঋত্বিক তাকে বলে, "ওখানে তো এসব হওয়ার কথা নয়"।  শুনেই পুতুলের পাল্টা জবাব, "তাও তো ওরা পারল। প্রতিবছর এসব ব্যঙ্গ, রঙ্গ, ট্যাঙ্গো হয়। সেটা তো চাট্টিখানি কথা নয় বদ্দা!" বঙ্গ সম্মেলনের এই প্রতিবাদকে কটাক্ষ করে পুতুল আরও বলে, "আসছে বছর আবার হবে বদ্দা। তখন ব্যঙ্গকে বলবে রঙ্গ। নতুন চেহারায়, নতুন মোড়কে এবারের নতুন সম্মেলন, রঙ্গ সম্মেলন।" 

আসলে বঙ্গ সম্মেলনে হেনস্থার প্রতিবাদে যেমন সামিল হয়েছেন অনেকে, সেরকম একদল মানুষের বক্তব্য, প্রতিবাদ শত অপমানিত হয়েও কলকাতার শিল্পীরা সেখানে হাজির হন। ঋত্বিকের এই ভিডিও দেখে তাকে সমর্থন করেছেন বহু নেটিজেন। একজন লিখেছেন, "ঠিক বলেছ। সব ভুলে ভুলো বাঙ্গালী আবার রঙ্গো -ম্যাঙ্গো-ট্যাঙ্গো তে যোগ দেবে...।" অন্য আরেকজন লিখেছেন, "আসছে বছর আবার হবে, এই কাঁকড়ার ঝুড়ির থেকে ওপরে উঠে কে কে কত কম টাকায় 'বিদেশ ফেরৎ' খ্যাতি অর্জন করতে এবং কে কত অপমানিত হতে পারে তার প্রতিযোগিতা করতে আবার যাবে। যারা বিবেক বোধ জেগে ওঠায় আর যাবে না , তাদের জায়গায় নতুনরা সিট ভরাতে যাবে। এরাই আসল সুবিধেবাদী, এবার এদের মুখোশ খুলে গেছে। এটা খুব দরকার ছিল নয়তো এরা যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারে সেটাই পক্ষ পাতিত্বের বিনিময়ে পাওয়া খেতাব আর সম্মানের কল্যাণে ভুলতে বসেছিল। আঁচটা এবার তাদের গায়ে লাগছে , জনগণ হাসছে।"      

আরও পড়ুন

Advertisement

 

এবছরের বঙ্গ সম্মেলনে ঘটে যাওয়া হেনস্থার প্রতিবাদ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শিল্পীমহল। প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, লোপামুদ্রা মিত্র, ইমন চক্রবর্তী , রূপম ইসলাম, রূপসা দাসগুপ্ত, দেবজ্যোতি মিশ্র, শ্রীজাত, সুবোধ সরকার, বিনায়ক বন্দোপাধ্যায়, কুমার মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়তী চক্রবর্তী, উপল সেনগুপ্ত, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার, সৌমিত্র মিত্র, শোভন  গঙ্গোপাধ্যায়, সোমলতা আচার্য্য চৌধুরি, উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায়, গৌরব সরকার, নীলাঞ্জন ঘোষ, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, জয় সরকার, রথীজিৎ ভট্টাচার্য, প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, রাহুল দাস, দেব চৌধুরী, শ্রীকান্ত আচার্য্য, নীল দত্তর মতো শিল্পী ও বিদ্বজ্জনেরা।  

মার্কিন মুলুকে যাওয়ার পর থেকেই পদে পদে সমস্যায় পড়তে হয় শিল্পীদের। এমনকী থাকা- খাওয়ার নিয়েও বিপদে পড়েন তাঁরা। কেটেছেঁটে ছোট করে দেওয়া হয় অনুষ্ঠান। শুধু তাই নয়, বহু শিল্পীদের পারিশ্রমিক পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। কর্মকর্তাদের যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও, তাদের ফোনে পায়নি শিল্পীরা। আয়োজকদের পাঠানো পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর মেইল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যেখানে তিনি লেখেন, "অসম্ভব ভুলভাল টাইমিং তো ছেড়েই দিলাম আমি ভাবিনি সেখানে আমাদের জন্য কোনও গাড়ির ব্যবস্থা থাকবে না, দুপুরের খাবার আসবে বিকেল ৪ টের সময়। তাও আমরা বাইরে থেকে খাবার কেনার পর। হোটেলের ঘরে পর্যন্ত ঢুকতে পারিনি আমরা। বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী আমায় এত সম্মান দেন, ভারতের সব থেকে প্রবীণ শিল্পী আমি সেখানে আমায় নিয়ে গিয়ে এমন অপমান! আমি আমার প্রাপ্য টাকাটুকু পাইনি। এবার বলুন আমার কী করণীয়?..." 

ফেসবুক লাইভে এসে জয়তী চক্রবর্তী গোটা বিষয়টা বলে, ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি শেয়ার করেন, কীভাবে অসম্মানিত হতে হয় তাঁদের। তিনি বলেন, "আমাদের ৫ তারিখ পর্যন্ত হোটেল বুকিং আছে বলে জানানো হয়েছে কিন্তু আজ সকাল (৪ জুলাই) থেকে আমরা আমাদের ঘরে ঢুকতে পারিনি। বিকেল ৪ টে বেজে গেলেও আমাদের খেতে দেওয়া হয় না। এক পরিচিত খাবার এনে দেওয়ার পর ওঁরা খাবার দেন। আমাদের এক শিডিউল, টাইম বলে নিয়ে আসা হয়েছিল, এখানে এসে পুরোটাই চেঞ্জ করে দেওয়া হয়। আমরা অনেকেই আমাদের নিজেদের ঘরে ঢুকতে পারিনি। পরে সৌগত দা এসে আমাদের কিছু শিল্পীকে উদ্ধার করেন এই পরিস্থিতি থেকে। আমি আজ নিজের চোখে গুরুজির যে অসম্মান দেখলাম সেটা মানতে পারছি না। আমাদের যে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাখা হয়েছিল তার দায় কে নেবে?"        

এবছরের বঙ্গ সম্মেলনের জন্য আটলান্টাতে পৌঁছেছিলেন একগুচ্ছ সঙ্গীতশিল্পী ও নাট্য ব্যক্তিত্বরা। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার, পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, জয়তী চক্রবর্তী (Jayati Chakraborty), রাঘব চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও তালিকায় রয়েছেন তরুণ শিল্পীরাও। অন্যদিকে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অনির্বাণ চক্রবর্তী, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সোহিনী সেনগুপ্ত, দেবশঙ্কর হালদার, সৌমিত্র মিত্র, সুজন মুখোপাধ্যায়, সুমন মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরাও সেখানে হাজির হয়েছিলেন। বাংলাদেশ থেকে আটলান্টাতে উড়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন। তবে প্রায় সকলকেই শিকার হতে হয় হেনস্থার। 

 

 

Advertisement

Advertisement