ভারত-ভুটান সীমান্ত লাগোয়া আদিবাসী অধ্যুষিত চা বাগান এলাকায় করোনা (Corona) সংক্রমণ ঠেকাতে এক বিষেশ টাস্কফোর্স গঠন করল আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলা প্রশাসন। বুধবার জেলার কালচিনি ব্লকে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা জানান, ভৌগলিক দিক থেকে এই ব্লকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই ব্লকে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
নির্বাচনের কারণে জেলার এই ব্লকে তৃণমূল (TMC) ও বিজেপি (BJP) দুই দলের প্রথম সারির নেতারাই জনসভা করে গিয়েছেন। প্রথমে এই ব্লকে নির্বাচনী জনসমাবেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তার কিছুদিন পরেই নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সভাগুলিতে কার্যত কোনওরকম বিধিনিষেধ না মেনেই পরস্পরের সংস্পর্শে আসেন হাজার হাজার মানুষ। স্বাস্থ্যদপ্তরের আশঙ্কা এই অবাধ মেলামেশার ফলে বাড়তে পারে সংক্রমণ। আর তেমনটা হলে তার প্রভাব পড়তে পারে প্রতিবেশী দেশ ভুটানের ওপরেও। যদিও ভুটানে এখনও লকডাউন চলছে, এবং সেখানে প্রবেশও বন্ধ রয়েছে। তবুও এই বিষয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না ভারত সরকার।
অন্যদিকে এই ব্লকের হাসিমারাতে রয়েছে বায়ুসেনার ঘাঁটি। বায়ুসেনার জওয়ানদের সঙ্গেও অবাধ মেলামেশা রয়েছে এই এলাকার সাধারন মানুষের। সেক্ষেত্রে কোনভাবেই যাতে বায়ুসেনাদের কর্মী ও আধিকারিকদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে সে দিকেও নজর রেখেছে ভারত সরকার। এই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখেই গড়া হয়েছে টাস্কফোর্স।
এদিন কালচিনির বিডিও অফিসে টাস্কফোর্সের বৈঠক হয়। এই টাস্কফোর্সে চা বাগানের ম্যানেজারদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বৈঠকে ১০টি চা বাগানের ম্যানেজাররা উপস্থিত ছিলেন। এই প্রসঙ্গে, বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, কালচিনির ৯০ শতাংশ বাসিন্দা চা বাগানে বসবাস করেন। সেই কারণেই এবার করোনা মোকাবিলায় তৈরি টাস্কফোর্সের কমিটিতে চা বাগানের ম্যানেজারদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জনসচেতনতার স্বার্থে বৃহস্পতিবার থেকে গোটা ব্লক জুড়ে মাইকিং করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে এদিনের বৈঠকে। পাশাপাশি ব্লকের রেশন দোকানগুলিতে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে, রেশন নেওয়ার সময় চা শ্রমিক গ্রাহকরা যেন সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলেন এবং তাঁদের মুখে যেন অবশ্যই মাস্ক থাকে। রেশন দোকানের মালিকরা করোনা মোকাবিলায় এই নির্দেশিকা না মানলে তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন।