করোনার তৃতীয় ঢেউ (Corona Third Wave) নিয়ে নয়া সতর্কতা বৈজ্ঞানিকদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি করোনাবিধি ঠিক মতো পালন করা না হয় তবে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে করোনার তৃতীয় ঢেউ শীর্ষে উঠতে পারে। তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় তৃতীয় ঢেউতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি করোনা সংক্রমণের বিষয়ে অনুমানের জন্য গতবছর একটি প্যানেল তৈরি করেছিল। সেই প্যানেল গাণিতিক মডেলের মাধ্যমে অনুমান করে। প্যানেলের সদস্য মণিন্দ্র আগরওয়াল বলেন, যদি করোনার নয়া ভ্যারিয়ান্ট আসে তাহলে তৃতীয় ঢেউতে বেশি দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
প্যালেনের সদস্যরা মনে করছেন, অক্টোবর-নভেম্বর মাসে করোনার তৃতীয় ঢেউ শীর্ষে উঠতে পারে। মণিন্দ্র আগরওয়াল ছাড়াও এই প্যানেলে রয়েছেন আইআইটি হায়দরাবাদের এম বিদ্যাসাগর এবং ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফের উপপ্রধান (মেডিক্যাল) লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল মাধুরী কানিতকর। মণিন্দ্র আগরওয়াল ট্যুইটে জানান, "আমরা ৩টি চিত্র ধরে নিয়ে এগোচ্ছি। প্রথমটায় আমরা আশাবাদী, যেখানে ধরা হচ্ছে অগাস্টের মধ্যে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে, এবং আর কোনও মিউট্যান্ট আসবে না। দ্বিতীয়টিতে মনে করা হচ্ছে যে টিকাকরণ ২০ শতাংশ কম কার্যকরী হবে। তৃতীয়টিতে মনে করা হচ্ছে যে, নতুন আরও একটি ভ্যারিয়ান্ট আসতে পারে, যা ২৫ শতাংশ বেশি সংক্রামক হবে।" তবে সেটা যে ডেল্টা প্লাস হবে না তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে একটি গ্রাফে তিনি দেখিয়েছেন যে, অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে সেকেন্ড ওয়েভ কমতে পারে এবং অক্টোবর-নভেম্বরে থার্ড ওয়েভ পিকে যেতে পারে।
তৃতীয় ঢেউতে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় অর্ধেক
বৈজ্ঞানিকেরা মনে করছেন তৃতীয় ঢেউতে দৈনিক সংক্রমণের পরিমান ১.৫ থেকে ২ লক্ষের মধ্যে থাকতে পারে, যা দ্বিতীয় ঢেউয়ের (Corona Second Wave) প্রায় অর্ধেক। দ্বিতীয় ঢেউতে গত ৭মে ৪.১৪ লক্ষ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। মণিন্দ্র আগরওয়াল বলেন, যদি কোনও নতুন ভ্যারিয়ান্ট আসে তাহলে তৃতীয় ঢেউ দ্রুত ছড়াবে। তবে টিকাকরণের গতি তৃতীয় ও চতুর্থ ওয়েভের সম্ভাবনাকে কমাতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, "যদি আমরা আশাবাদী থাকি তাহলে এটা ধরে নিতে পারি যে তৃতীয় ঢেউতে সংক্রমণ প্রতিদিন ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষের মধ্যে থাকতে পারে।"
এম বিদ্যাসাগর যা জানিয়েছেন...
প্যানেলের আরও এক সদস্য এম বিদ্যাসাগর বলেন, তৃতীয় ঢেউতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সংখ্যাও কমতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি ব্রিটেনের উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে ব্রিটেনে প্রতিদিন ৬০ হাজারের বেশি আক্রান্ত এবং ১,২০০-র বেশি মৃত্যু হচ্ছিল। কিন্তু চতুর্থ ঢেউতে তা কমে গিয়ে দৈনিক সংক্রমণ ২১ হাজার এবং মৃত্যু ১৪তে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যাসাগর বলেন, এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রয়েছে টিকাকরণের। তাই তৃতীয় ঢেউয়ের ঝুকির বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার টিকাকরণের ওপরে জোর দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।