দেশে করোনা (Corona) সংক্রমণ কিছুটা হলেও কমেছে। আরও ভাল খবর হল কোনও কোনও দিন নয়া আক্রান্তের চেয়ে সুস্থের সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। যদিও মৃত্যুর সংখ্যা এখনও আতঙ্কের কারণ হিসেবে রয়ে গিয়েছে। তবে এর স্বস্তির খবর হল, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করার পথে হাঁটতে চলেছে কয়েকটি রাজ্য। দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশ চলছে আনলকের (Unlock) প্রস্তুতি। তবে কোনও কোনও রাজ্য আবার এমনও রয়েছে, যেখানে লকডাউনের (Lockdown) সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেখা নেওয়া যাক গোটা দেশের চিত্রটা।
দিল্লি - রাজধানী দিল্লিতে ৭ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে লকডাউনের মেয়াদ। তবে ৩১ মে-এর পর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে আনলকের প্রস্তুতি। জানা যাচ্ছে ৩১ মে থেকে ২টি ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শিল্পতালুকে ক্যাম্পাসের মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং ও প্রোডাকশান ইউনিট চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে এবং কাজের জায়গায় নির্মাণকার্য চালানো যাবে।
মধ্যপ্রদেশ - ১ জুন থেকে শুরু হচ্ছে আনলকের প্রক্রিয়া। তবে নাইট কারফিউ এবং প্রতি রবিবার জনতা কারফিউ থাকবে। ৫ শতাংশের বেশি এবং ৫ শতাংশের কম সংক্রমণের হার যুক্ত জেলায় আনলকের পৃথক পৃথক গাইডলাইন থাকবে। যেখানে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি সেখানে দোকানপাট সন্ধে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর যেখানে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের কম সেখানে দোকানপাট খোলা থাকবে সাধারণ দিনের মতোই। এছাড়া যেখানে সংক্রমণ বেশি সেখানে রেস্তোরাঁগুলি শুধুমাত্র হোম ডেলিভারির জন্য খুলবে। কিন্তু যেখানে সংক্রমণ কম সেখানে ৫০ শতাংশ গ্রাহককে বসার অনুমিত দেওয়া হচ্ছে।
হিমাচলপ্রদেশ - ৩১ মে থেকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সমস্ত দোকান খলার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু শনি ও রবিবার জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দোকানগুলি খোলা থাকবে। জারি থাকবে সপ্তাহান্তের কারফিউ। পাশাপাশি সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চলবে সরকারি দফতর।
উত্তরপ্রদেশ - উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যেই ৩১ মে সকাল ৭টা পর্যন্ত লকডাউন জারি রয়েছে। সেক্ষেত্রে এখানে লকাডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি বা আনলক নিয়ে নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। তবে সূত্রের খবর, জুনের প্রথম সপ্তাহে লকডাউন কিছুটা হলেও শিথিল করা হতে পারে। যদিও নাইট কারফিউ এবং সপ্তাহান্তের কারফিউ জারি থাকবে। শপিং মল, সিনেমা-থিয়েটর, সেলুন, কনটেনমেন্ট জোনে থাকা দোকান, সামাজিক, ধার্মিক ও রাজনৈতিক জমায়েতের ওপরে বিধিনিষেধ থাকবে। তবে নির্মাণকার্য, দোকান ও রেস্তোরাঁগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
মহারাষ্ট্র - এই রাজ্যে ১৫ জুন পর্যন্ত লকডাউন নিশ্চিত। আর এই কথা জানিয়েছেন স্বয়ং রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তবে লকডাউনে কিছুটা শিথিলতা থাকতে পারে। সেই বিষয়ে আলাদা গাইডলাইন তৈরি করা হবে বলেও জানা যাচ্ছে।
ঝাড়খন্ড - ২৭ মে পর্যন্ত কথা থাকলেও পরে ৩ জুন পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে ঝাড়খন্ডে। এই নিয়ে তৃতীয়বার লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল এরাজ্যে।
রাজস্থান - মরুরাজ্যে লকডাউন থাকবে ৮ তারিখ পর্যন্ত। কিন্তু ১ জুন থেকে কিছুটা হলেও শিথিলতা মিলবে। তবে ৩০ জুন অর্থাৎ আজকে পর্যন্ত বিয়ে শুধুমাত্র বাড়িতে বা কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমেই করা যাবে। আর তাতে সামিল হতে পারবেন সর্বোচ্চ ১১ জন।
পশ্চিমবঙ্গ - বাংলায় ১৬ মে থেকে চলছে লকডাউন। প্রথমে ৩০ মে পর্যন্ত জারি করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ১৫ জুন সন্ধে ৬টা পর্যন্ত করা হয়েছে। লাগু থাকবে সমস্ত বিধিনিষেধও।
তামিলনাড়ু - এই রাজ্যে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন থাকলেও তা বাড়িয়ে ৭ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ফল, সবজি ও মুদির দোকানও বন্ধ থাকবে।
কেরল - এখানে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৯ জুন পর্যন্ত। এর আগে ১৬ ও ২৩ মে-তেও ১ সপ্তাহ করে লকডাউন বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
কর্ণাটক - এই রাজ্যে ২৪ পর্যন্ত লকডাউনের কথা থাকলেও তা ৭ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত কর্ণাটকে এখনও বাড়ছে সংক্রমণ।
উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির চিত্র
যদি দেশের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির দিকে নজর দেওয়া হ তবে দেখা যাবে, মিজোরামের রাজধানী আইজলে ৬ জুন পর্যন্ত লকডাউন থাকবে। মেঘালয়ের পূর্ব খাসি হিল জেলায় ৭ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে লকডাউন। অরুণাচলের ৭টি জেলাতেও ৭ জুন পর্যন্ত থাকছে লকডাউন। মণিপুরের ৭টি জেলায় লকডাউন থাকছে ১১ জুন পর্যন্ত। সিকিমে লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আজ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া নাগাল্যান্ডেও ১১ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে লকডাউনের মেয়াদ।