ওড়িশার বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার মূল কারণ জানা গিয়েছে বলে জানালেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আজ তিনি বলেন, 'ওড়িশার বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে, গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। আমরা আজ ট্র্যাক পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করব। সব মৃতদেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হল বুধবার সকালের মধ্যে পুনরুদ্ধারের কাজ শেষ করা, যাতে এই ট্র্যাকে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'রেলওয়ে সেফটি কমিশনার বিষয়টি তদন্ত করেছেন। তবে আমরা ঘটনার কারণ এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছি। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং পরিবর্তনের কারণে এটি ঘটেছে। এই মুহূর্তে আমাদের মনোযোগ পুনরুদ্ধারের দিকে। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন এটা তা নয়। কবচের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং পরিবর্তনের কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে।'
বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনাকে ঘিরে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের ট্রেন চলাচল। শুক্রবারের দুর্ঘটনার পর শনিবারই বাতিল হয়েছে প্রচুর ট্রেন। এবার রবিবারও একই চিত্র। দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার মোট ১৬টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৩টি ট্রেনের। আর ১টি ট্রেনের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ট্রেন দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১,০৯১। দ্রুত যাতে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায়, সেই চেষ্ঠাও চালাচ্ছেন কর্মীরা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় লাইন মেরামতের কাজ চলছে। এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করছেন। পুনরুদ্ধারের কাজ ত্বরান্বিত করতে সাত নম্বর পোক্লিন মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। দুটি রিলিফ ট্রেনও ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে। একটি ১৪০ টন রেলওয়ে ক্রেন এবং তিনটি রোড ক্রেন সাইটে কাজ করছে। আরও একটি রোড ক্রেন ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। কাজের তদারকি করছেন রেলমন্ত্রী।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল-সহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল সেই দাবি তুলেছেন। পাল্টা জবাব দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিণী বৈষ্ণবও। তিনি বলেন, 'এটা রাজনীতি করা সময় নয়। এখন উদ্ধারকার্যের সময়। সম্পূর্ণ গুরুত্ব এখন উদ্ধারকার্যে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত শক্তি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আমি কোথাও চলে যাচ্ছি না, এখনেই আছে। উদ্ধারকার্য খুব দ্রুততার সঙ্গে চলছে।'