scorecardresearch
 

ফের তোপ সুদীপের, আদালতের হুঁশিয়ারি অভিষেকের, কীভাবে ঘর সামলাবেন বিপ্লব?

বাংলায় ভোট মিটতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের নজর যে ত্রিপুরার দিকে, তাতে আর কোনও রাখঢাক নেই। নতুন দায়িত্ব নিয়ে অভিষেকের প্রথম ভিনরাজ্য সফর ছিল ত্রিপুরাই। গত অগাস্টে সেখানে গিয়ে অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছেন, বিপ্লব দেবের শেষের শুরু হয় গিয়েছে। তৃণমূল শিবির যে বিপ্লবকে আক্রমণ শানিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর এখন ঘরে-বাইরে দুই দিকেই জর্জরিত। ফের কার্যত বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দেগে বিজেপি-র অস্বস্তি বাড়িয়েছেন সুদীপ দেব বর্মন৷

Advertisement
ত্রিপুরায় ঘরে বাইরে আক্রমণে জর্জরিত বিপ্লব দেব ত্রিপুরায় ঘরে বাইরে আক্রমণে জর্জরিত বিপ্লব দেব
হাইলাইটস
  • ত্রিপুরায় ঘরে বাইরে আক্রমণে জর্জরিত বিপ্লব দেব
  • তৃণমূলের দোসর হয়েছে বামেরা
  • অন্যদিকে নতুন করে অস্বস্তিতে ফেলেছেন সুদীপ রায় বর্মন

প্রথমে ঠিক হয়েছিল ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় ১৫ সেপ্টেম্বর পদযাত্রা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।  কিন্তু সেই মিছিলের অনুমতি দেয়নি ত্রিপুরা পুলিশ৷ অনুমতি না মেলায় পরের দিন, ১৬ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরায় গিয়ে অভিষেক মিছিল করবেন বলে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়৷ কিন্তু  বিশ্বকর্মা পুজোর কারণ দেখিয়ে সেই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। প্রশাসনের তরফে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো। ফলে আইনশৃঙ্খলার কারণে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। ফলত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর জারি আগরতলা জুড়ে। পর পর দু' দিন মিছিলের আবেদন খারিজ হওয়ার পরও হাল ছাড়তে নারাজ ঘাসফুল শিবির।  তাই আগামী ২২ সেপ্টেম্বর আগরতলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের  পদযাত্রার অনুমতির জন্য ত্রিপুরা পুলিশকে নতুন করে  চিঠি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসঙ্গে তৃণমূলের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, এবারেও মিছিলের অনুমতি না মিললে আদালতের দ্বারস্থ হবে তারা৷ গোটা বিষয়টিতেই জোড়া ফুলের নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। ভয় পেয়েই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এসব করছেন বলে ট্যুইটারে তোপ দাগছেন অভিষেক।

 

 

বাংলায় ভোট মিটতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের নজর যে ত্রিপুরার দিকে, তাতে আর কোনও রাখঢাক নেই। নতুন দায়িত্ব নিয়ে অভিষেকের প্রথম ভিনরাজ্য সফর ছিল ত্রিপুরাই। গত অগাস্টে সেখানে গিয়ে অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছেন, বিপ্লব দেবের শেষের শুরু হয় গিয়েছে। তৃণমূল শিবির যে বিপ্লবকে আক্রমণ শানিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর এখন ঘরে-বাইরে দুই দিকেই জর্জরিত।  ফের কার্যত বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দেগে বিজেপি-র অস্বস্তি বাড়িয়েছেন সুদীপ দেব বর্মন৷ ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা নিয়েই সরাসরি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন  এই বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়ক ৷ সুদীপ রায় বর্মন  অবশ্য দাবি করছেন, ত্রিপুরায় বিরোধীদের উপরে যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে, তা দলের শীর্ষ নেতৃত্বও পছন্দ করে না৷

Advertisement

 

 

 

 

সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে বিপ্লব দেবের  সংঘাত অনেক দিন ধরেই গেরুয়া শিবিরের মাথাব্যথার কারণ৷ এমন কি, সুদীপ তৃণমূলে  যোগ দিতে পারেন, এই জল্পনাও তুঙ্গে রয়েছে ত্রিপুরার রাজনীতিতে৷ তারপরও অবশ্য বিপ্লব দেবের উপরেই ভরসা রেখেছেন নাড্ডা-শাহরা৷ কয়েকদিন আগে বিপ্লব দেব সরকারের মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হলেও তাতে জায়গা হয়নি সুদীপ রায় বর্মন বা তাঁর কোনও অনুগামীর৷ তার পরে ফের রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে কার্যত দলকেই আরেকবার অস্বস্তিতে ফেলছেন সুদীপ রায় বর্মন। 

 

আরও পড়ুন: মোদীর সঙ্গে এক আসনে, বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ঠাঁই মমতার

প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত ত্রিপুরা৷ তৃণমূলের পর সিপিএমের সঙ্গেও বিজেপি-র সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, জ্বলেছে আগুন৷ এই প্রসঙ্গ তুলেই সুদীপ রায় বর্মন বলেছেন, ''নরেন্দ্র মোদীর 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' থেকে সরে এলে মানুষ আমাদের ক্ষমা করবে না।" 

 

 

গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত ত্রিপুরার হামলা নিয় বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সিপিএম শিবিরও। রাষ্ট্রপতির কাছে সময় চেয়েও, না পাওয়ার অভিযোগে সুর চড়িয়েছেন  সীতারাম ইয়েচুরি, মানিক সরকাররা।   দিল্লিতে বসেই, ত্রিপুরা নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছে সিপিএম। গত সপ্তাহে ত্রিপুরায়, একের পর এক সিপিএম দফতর এবং সিপিএম নেতাদের বাড়িতে হামলা হয়। ভাঙচুর থেকে আগুন, কিছুই বাদ যায়নি। আর, ত্রিপুরার এই পরিস্থিতির বিষয়েই জানাতে  রাষ্ট্রপতির কাছে সময় চেয়েছিলেন সিপিএম নেতারা। কিন্তু, সাক্ষাতের সময় মেলেনি বলে অভিযোগ তুলে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে, ক্ষোভ উগরে দেন  সিপিএম নেতৃত্ব। যদিও, ত্রিপুরার শাসক দল বিজেপি বরাবরই দাবি করে আসছে, রাজনৈতিক হিংসায় উস্কানি দিয়েছে সিপিএমই।

 

 

 

আরও পড়ুন: বাড়িতে অশরীরির বাস নয়তো? এই লক্ষণগুলি থাকলে সাবধান

২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট।  তাঁর আগে দেশের উত্তর-পূর্বের বাঙালি অধ্যুষিত ছোট্ট রাজ্যটিতে মাটি তৈরি করতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। নিজেদের সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। দলের বর্ষীয়ান নেতা থেকে যুব-তরুণরা, নিয়মিত পাড়ি দিচ্ছেন পড়শি রাজ্যে। সে রাজ্যে আক্রান্ত হওয়ারও অভিযোগ তুলছেন তাঁরা। ত্রিপুরায় গিয়ে অতিমারি আইন ভাঙার অভিযোগে অগস্টের ৭ তারিখ  তৃণমূলের ১৪ জন নেতাকে গ্রেফতার করে স্থানীয় খোয়াই থানার পুলিশ। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ত্রিপুরায় পৌঁছন স্বয়ং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষরা। থানায় গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবস্থান করেন অভিষেক। এরপর একাধিক বার তৃণমূল সে রাজ্যের প্রশাসনকে নানা অভিযোগে কাঠগড়ায় তুলেছে। ঘাসফুল শিবির যে এত সহজে হাল ছাড়তে রাজি নয় সে কথা বিপ্লব দেবকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন অভিষেকরা। তারমধ্যেই ত্রিপুরা নিয়ে এবার শাসক বিজেপির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে সিপিএমও।  বলা যায় তৃণমূলের পাশেই রয়েছে সিপিএম। শোনা যাচ্ছে ত্রিপুরা নিয়ে এবার নতুন ভাবনা চিন্তা করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অংশ হিসাবে আর আগে থেকে কোনও কর্মসূচি ঘোষণা নয়, এবার সে রাজ্যে সারপ্রাইজ ভিজিট হবে বলে তৃণমূলের  অন্দরের খবর। সব মিলিয়ে নির্বাচনের দেড় বছর আগেই  ত্রিপুরার রাজনীতিতে নিজের গড় সামলানোই এখন বিপ্লব দেবের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। 

 

Advertisement