রাজ্যে ৪ বছরের অনার্স কোর্স চালু নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মিলন মেলা প্রাঙ্গনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতীদের সংবর্ধনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আগে তিন বছর লাগত গ্র্যাজুয়েশন করতে। পাস কোর্সের ক্ষেত্রে গ্র্য়াজুয়েশন তিনবছরই লাগবে। তবে, অর্নাসের ক্ষেত্রে লাগবে ৪ বছর। অনার্সের ক্ষেত্রে এরপর মাস্টার্স ডিগ্রি করলে ২ বছরের জায়গায় এক বছর লাগবে। তাহলে এখানে ১ বছর কম লাগছে।'
এর সুবিধাও ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'সেন্ট্রাল থেকে নতুন নিয়ম করেছে ইউজিসি। অন্য রাজ্যগুলো মানলে আমাদেরও মানতে হবে। না হলে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। তাই এটা আমাদের করতে হয়েছে। সর্ব ভারতীয় ক্ষেত্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে এটা করতে হয়েছে।'
বুধবার ট্যুইট করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, রাজ্যে ৪ বছরের অনার্স কোর্স চালু হলেও জাতীয় শিক্ষানীতিতে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।। ট্যুইটে ব্রাত্য বসু যা লিখেছেন তা হল, 'একটি বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রচারতি হচ্ছে যে রাজ্য সরকার ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি মেনে নিয়েছে। এটিকে সত্যের অপলাপ বললে কম বলা হবে। রাজ্য সরকার একটি সম্পূর্ণ পৃথক স্টেট এডুকেশন পলিসি তৈরি করছে, যেখানে সমস্ত 'বেস্ট প্র্যাকটিসেস' বা ভাল ব্যবস্থাগুলিকে নেওয়া হয়েছে। এই রাজ্য শিক্ষানীতি দ্রুত আপলোড হবে।'
ব্রাত্য বসু আরও লেখেন, '৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু না করলে আমাদের ৭ লক্ষ ছাত্রছাত্রীরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় অংশই নিতে পারতো না। এক্ষেত্রে তাদের রাজ্যের বাইরে গিয়ে পড়ার প্রবণতা বেড়ে যেত। যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল তারা বিপদে পড়তো। এই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ৩ বছরের ডিগ্রি কোর্স রেখে দিলে বিগত বাম সরকারের ক্লাস ওয়ান থেকে ইংরেজি তুলে দেওয়া বা ব্রিজ কোর্স চালু করার মতো বা হয়তো তার থেকেও বেশি ছাত্রবিরোধী সিদ্ধান্ত হত।' শিক্ষামন্ত্রী আরও লেখেন, 'মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের আপামর ছাত্রছাত্রীর স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত চালু করতে বলেছেন। জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন জিনিস, যেমন বিদ্যালয়ে ৫+৩+৩+৪ শ্রেণি চালু করা বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অতিরিক্ত কেন্দ্রীকরণ, এইরকম অনেকগুলি নীতির বিরোধিতা আমরা করছি এবং আমাদের রাজ্য শিক্ষানীতি গ্রহণ করিনি।'
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'রাজ্যে টাকার অভাবে কোনও পড়ুয়ার পড়াশোনা বন্ধ হবে না। কৃতীদের পরিশ্রমকে কুর্নিশ। টাকার জন্য কারও পড়াশোনার অভাব হবে না। কয়েকজন চিঠি দিয়েছিলেন সমস্যার কথা জানিয়ে। আমি কোনও কাজ ফেলে রাখা পছন্দ করি না। তাদের চিঠি মুখ্যসচিবকে পাঠিয়ে দিয়েছে। ১০ লাখ টাকা করে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পাবেন। বাবা-মাকে গ্যারেন্টার হতে হবে না। রাজ্য সরকারই গ্যারেন্টার হবে লোনের।'