২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ভাল ফলের আশা করছে সিপিএম। যদিও তাদের বক্তব্য, ভাল ফল একমাত্র হতে পারে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হলেই। তাদের আরও দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির ফাঁপা প্রতিশ্রুতি মানুষ দেখেছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং দমদম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'লাল পতাকা সেখানে থাকে যখন কেউ থাকে না। অন্যকে বিশ্বস্ত বলে মনে করা হয়। মানুষ যদি স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তাহলে ফলাফলে তার প্রতিফলন দেখা যাবে।'
হিংসার অতীতকে মাথায় রেখে বাংলায় এবার ৭ দফায় ভোট হবে। এছাড়াও সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হবে এই বাংলাতেই। ভোট ঘোষণার আগেই আস্থা তৈরির ব্যবস্থা হিসাবে নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাজ্যে পাঠিয়েছিল।
২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্যে ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল সিপিআই(এম)-এর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট। ২০১৯ লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও রাজ্যে তারা কোনও আসন জিততে পারেনি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বেশ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে সিপিএম। পশ্চিমবঙ্গে উদ্ভূত প্রতিটি বড় ইস্যুকে তারা হাতিয়ার করার চেষ্টা চালিয়েছে। সন্দেশখালি ইস্যুতে প্রথমে বামেদেরই মাঠে নামতে দেখা গিয়েছিল। তাই এবার সিপিএম রাজ্যে কয়েকটি আসন জিতবে বলে আশা করছে।
এই বিষয়ে সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ১২ বছর আগে যারা তৃণমূলের প্রতি আস্থা রেখেছিল, আজ তারাই অসন্তুষ্ট। সুজনের দাবি, 'মনে ভয় থাকা সত্ত্বেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামবাসীরাও রাজ্যের শাসক দলের অত্যাচারের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে শুরু করেছে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, মানুষের ভয় এখন ক্রোধে পরিণত হয়েছে। ভোটারদের একটি অংশ, যারা ২০১৯ সাল ও ২০২১ সালে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল, তারা বামেদের দিকে ফিরে আসছে। তারা বুঝতে পেরেছে যে টিএমসি এবং বিজেপি একই - একটি মুদ্রার মাত্র দুটি দিক।'
দল বদল নিয়ে সুজনের দাবি, ভোটাররা তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এটি বুঝতে পেরেছেন। বিজেপি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে প্রাক্তন টিএমসি নেতা অর্জুন সিং এবং তাপস রায়কে রাখলেও, রাজ্যের শাসক দল কৃষ্ণ কল্যাণী এবং মুকুটমণি অধিকারীকে প্রার্থী করেছে, যারা গেরুয়া পার্টির টিকিটে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিল। টিএমসি এবং বিজেপি উভয়ের জন্যই অবিশ্বাস বাংলা জুড়ে দ্রুত বাড়ছে।' তিনি আরও বলেন, 'মানুষ যদি তাদের নিজেরভোট দিতে পারে তবে ফলাফল দুটি দলের উভয়ের জন্যই সুখকর হবে না। রাজ্যের লোকেরা চাকরির অভাব, প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি এবং আইনশৃঙ্খলার মতো সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন।'