scorecardresearch
 

তৃণমূলে টলিতারকা-যোগ, নির্বাচনের আগে কেন মমতা শিবিরে আশ্রয় নিচ্ছেন অভিনেতারা?

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের একাধিক শিল্পী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক মঞ্চে টলি ও টেলি তারকাদের নিয়মিত দেখা গিয়েছে সবসময়। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন চলচ্চিত্র তারকা এবং শিল্পীরা মমতা শিবিরে যোগ দিচ্ছেন? 

Advertisement
ঠাৎ করেই কেন চলচ্চিত্র তারকা এবং শিল্পীরা মমতা শিবিরে যোগ দিচ্ছেন? ঠাৎ করেই কেন চলচ্চিত্র তারকা এবং শিল্পীরা মমতা শিবিরে যোগ দিচ্ছেন?
হাইলাইটস
  • বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের একাধিক শিল্পী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক মঞ্চে টলি ও টেলি তারকাদের নিয়মিত দেখা গিয়েছে সবসময়
  • ঠাৎ করেই কেন চলচ্চিত্র তারকা এবং শিল্পীরা মমতা শিবিরে যোগ দিচ্ছেন? 

একুশের নির্বাচনের আগে বিধায়ক-সাংসদদের তৃণমূল ত্যাগের হিড়িক বাড়লেও, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের একাধিক শিল্পী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক মঞ্চে টলি ও টেলি তারকাদের নিয়মিত দেখা গিয়েছে সবসময়। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন চলচ্চিত্র তারকা এবং শিল্পীরা মমতা শিবিরে যোগ দিচ্ছেন? 

গত সাত দিনে অভিনেতা দীপঙ্কর দে, জনপ্রিয় অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়, পিয়া সেনগুপ্ত, জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা ভারত কল, শ্রীতমা ভট্টাচার্জি, এবং রণিতা দাসের মত জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যোগ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পীদের প্রশংসার বিষয়ে বরাবরই উদাত্ত ছিলেন। তিনি নিজে টেলিসিরিয়ালের ভক্ত এমনটাই বলেছিলেন। 

তবে তৃণমূলের সঙ্গে সিনেমাও টেলিতারকাদের যোগ আজকের কথা নয়। জনপ্রিয় মুখ হিসেবে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন তাপস পাল। ২০০১ সালে বিধায়ক পদে জিতেও ছিলেন তিনি। এরপর কৃষ্ণনগর থেকে দু'বার সাংসদ পদে নির্বাচিতও হয়েছিলেন। তাপস পালের পর তৃণমূলে আসেন দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রী শতাব্দী রায় ও দেবশ্রী রায়। ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করে সাংসদ হন শতাব্দী রায়। ২০১১ সালে রায়দিঘির বিধানসভা আসনে বাম হেভিওয়েট প্রার্থী কান্তি গাঙ্গোপাধ্যায়কে পরাস্ত করে বিধায়ক হন দেবশ্রী রায়।

২০১৪ সালে ফের তৃণমূলে শুরু তারকা-যোগ। লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতার দলে নাম লেখালেন দেব। অভিনেতার এই সিদ্ধান্তে রীতিমত সাড়া পড়ে গিয়েছিল সিনেমা ও রাজনৈতিক মহলেও। ২০১০ সাল থেকেই বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে বড় ম্যাটিন আইডল হিসাবে বিবেচনা করা হয় দেবকেই। সেই অভিনেতার তৃণমূল-যোগে সাড়া ফেলবে সেটাই কাম্য। জনপ্রিয়তায় দেবের বিকল্প নেই, তা তৃণমূল জানে। হলও তাই। ঘাটালের আসন থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতলেন অভিনেতা। এক বার নয়, পর পর  দু'বার।

Advertisement

শুধু দেব নয়। ২০১৪ সালে তৃণমূলে যোগ দিলেন কিংবদন্তী অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন-কন্যা মুনমুন সেন। বাঁকুড়া থেকে মুনমুনকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়াকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন তিনি। যদিও ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে আসানসোলে দাঁড়িয়ে বিজেপির প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়োর কাছে পরাজিত হন সুচিত্রা-কন্যা। এরপর অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব কিছুটা বেড়েছে।

সেই বছরেই লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে তৃণমূলে আসেন আরও এক কিংবদন্তি অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। মেদিনীপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে তৃণমূলে আসেন অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীও। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন বারজোড়া থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তবে বামফ্রন্টের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। বর্তমানে নিখিল ভারত যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন অভিনেতা। 

তৃণমূলে ফের তারকা যোগ ঘটে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে। টলিউডের জনপ্রিয় দুই নায়িকা মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত হাসান যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে। যাদবপুর ও বসিরহাট থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি আমফানের সময় দুই তারকাকে তৃণমূলের হয়ে নিজেদের সংসদীয় এলাকায় দুর্গতদের পাশে থাকতেও দেখা যায়। 

আসলে আসন জয়ের জন্য নির্বাচনী রাজনীতিতে চলচ্চিত্র তারকাদের প্রবেশ কোনও নতুন ঘটনা নয় বা একটি দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বিজেপি শিবিরেও আশ্রয় নিয়েছেন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। নির্বাচনের সময় যে কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে জনপ্রিয় মুখ খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফিল্ম এবং টেলিভিশন জগতের তারকারা বাঙালির একেবারে ঘরের। তাই জনমানসের মন ধরতে নিঃসন্দেহে এদের হাতিয়ার করতে পারে দল। কিন্তু বিধায়কের টিকিট কারা কারা পাবেন, সেদিকে লক্ষ্য থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

Advertisement