scorecardresearch
 

‘বাংলার মেয়ে’ vs ‘ঘরের ছেলে', মুখোমুখি লড়াইয়ের আগেই নেট দুনিয়ায় জমজমাট দাদা-দিদির দ্বৈরথ

মার্চের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে দিন ঘোষণা করে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন। স্বয়ং সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। এমনিতেই প্রতিদিনি রাজ্যে বাড়ছে ভোটের উত্তাপ। দিন ঘোষণর পর সেই তাপ যে আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে তা বলাইবাহুল্য। আর এবার ভোট বাংলায় হট কেক হয়ে উঠেছে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একদা তাঁর ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই। প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের নানা প্রান্তে জনসভায় একে অপরকে আক্রমণ করে চলেছেন দু'জনে। সেই লড়াইয়ের আঁচে কিন্তু এবার নেটদুনিয়াও সরগরম।

Advertisement
নেটপাড়ায় জমে গিয়েছে দুই তরফের যুদ্ধ নেটপাড়ায় জমে গিয়েছে দুই তরফের যুদ্ধ
হাইলাইটস
  • "বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়"সম্প্রতি এই স্লোগান প্রকাশ করা হয়েছে
  • তার পাল্টা হিসাবে 'পশ্চিমবঙ্গ ঘরের ছেলেকেই চায়’ স্লোগান তুলেছে শুভেন্দু শিবির
  • যা নিয়ে এখন নেটপাড়ায় জমে গিয়েছে দুই তরফের যুদ্ধ

মার্চের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে দিন ঘোষণা করে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন। স্বয়ং সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। এমনিতেই প্রতিদিনি রাজ্যে বাড়ছে ভোটের উত্তাপ। দিন ঘোষণর পর সেই তাপ যে আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে তা বলাইবাহুল্য। আর এবার ভোট বাংলায় হট কেক হয়ে উঠেছে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একদা তাঁর ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই। প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের নানা প্রান্তে জনসভায় একে অপরকে আক্রমণ করে চলেছেন দু'জনে। সেই লড়াইয়ের আঁচে কিন্তু এবার নেটদুনিয়াও সরগরম। সম্প্রতি, একুশের ভোটে  "বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়" স্লোগান প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার পাল্টা দিতে 'পশ্চিমবঙ্গ ঘরের ছেলেকেই চায়’ স্লোগান তুলেছে গেরুয়া শিবির। যা নিয়ে এখন নেটপাড়ায় জমে গিয়েছে দুই তরফের যুদ্ধ।

রীতিমত কর্পোরেট কায়দায় তৃণমূলের স্লোগান লঞ্চ
'হয় এবার নয় নেভার', 'বদলা নয় বদল চাই', 'মানুষের সঙ্গে মা-মাটি-মানুষের সরকার' অতীতে বারবার দলীয় স্লোগান তুলে আম জনতার মাঝে পৌঁছে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  এবারও তাই পদ্মের সঙ্গে ঘাসফুলের যুদ্ধে পুরনো ফরমুলাতেই ভরসা রাখছে তৃণমূল। এবার তাদের স্লোগান, বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়। একুশের নির্বাচনের জন্য গত শনিবার তৃণমূল ভবনে রীতিমতো কর্পোরেট ধাঁচায় অনুষ্ঠান করে লঞ্চ করা হয়েছে এই স্লোগান। মনে করা হচ্ছে সুচারুভাবেই এই স্লোগান বেছেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার ভোট প্রচারের বিজেপিকে বারবার বহিরাগত তত্ত্বে আক্রমণ করছে ঘাসফুল শিবির। আর নিজেদের বক্তব্যকে আরও স্পষ্ট করতে তাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা ঘরের মেয়ের কোনও বিকল্প নেই সেই কথাটাই যেন স্লোগানের মধ্যে দিয়ে বোঝাতে চেয়েছে ঘাসফুল শিবির।

একুশের ভোটে তৃণমূলের নতুন স্লোগান
একুশের ভোটে তৃণমূলের নতুন স্লোগান

নেটমাধ্যমে পাল্টা প্রচার শুরু গেরুয়াবাহিনীর
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্য সফরে এসে বারবার বলছেন, ‘‘বাংলার ভূমিপুত্র হবেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ তার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলের জল্পনায় উঠে এসছে  মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর নাম। যদিও এ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন ঘোষণা করেনি বিজেপি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে তৃণমূলের স্লোগান যখন ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’, সে সময়ই বিজেপি নেতা শুভেন্দুর ছবি দিয়ে নেট মাধ্যমে পাল্টা স্লোগান ‘পশ্চিমবঙ্গ ঘরের ছেলেকেই চায়’ নজর কেড়েছে সকলের। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা ইতিমধ্যে এই স্লোগান দিতে শুরু করেছে।

Advertisement
নেট দুনিয়ায় পাল্টা স্লোগান শুভেন্দু অনুগামীদের
নেট দুনিয়ায় পাল্টা স্লোগান শুভেন্দু অনুগামীদের

শুভেন্দুকে  নিয়ে স্লোগানে বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন
বিজেপির তরফে এখনও একুশের ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। সেখানে শুভেন্দু অনুগামীদের  ‘পশ্চিমবঙ্গ ঘরের ছেলেকেই চায়’ এই প্রচার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টিকে একেবারেই ভাল ভাবে দেখছে না বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের শিবির। কারণ স্লোগান প্রচারে কেবল শুভেন্দুর ছবি রাখা হয়েছে, তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। 

শুভেন্দু পন্থীদের সাফাই
 শুভেন্দুর ছবির সঙ্গে ‘পশ্চিমবঙ্গ ঘরের ছেলেকেই চায়’এই স্লোগান দলের নয় তা স্পষ্ট জানাচ্ছেন বিজেপির মেদিনীপুরের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শমিত দাস। ব্যক্তিগত পছন্দ ও আবেগ থেকেই শুভেন্দু পন্থীরা এমন করছেন বলে ইঙ্গিত দিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপিতে যাওয়া মেদিনীপুরের যুব নেতা স্নেহাশিস ভৌমিকও জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত ভাললাগা থেকেই তিনি 'দাদা'র জন্য স্লোগান পোস্ট করেছেন। 

ভোট ময়দানে অব্যাহত মমতা-শুভেন্দু বাক্যবান
 ‘‘আমার পরে অভিষেক-শুভেন্দুরা আরও ৫০ বছরের প্রজন্ম তৈরি করবে।’’ ২০১৮ সালে যখন অভিষেক ও শুভেন্দুর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছিল তখন এমন মন্তব্য করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। একুশের ভোটের আগে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পদ্মে গমন ঘটেছে শুভেন্দুর। আর তারপর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে প্রকাশ্যেই একে অপরকে নিশানা করে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী।  শুভেন্দুর গড় নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সেখানে প্রার্থী হবেন বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন ইতিমধ্যে। এই আসন থেকে তিনিই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কিনা, তা বিজেপির নেতৃত্বের ওপর ছেড়ে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন, নন্দীগ্রাম থেকে গেরুয়া শিবিরের হয়ে যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন না কেন, মাননীয়াকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে হারাবেন তিনি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে  মমতা বনাম শুভেন্দুর মুখোমুখি লড়াই হতে চলেছে কিনা তা সময়ই বলবে তবে দুই তরফের কেউই যে ছেড়ে কথা বলবেন না সেই বিষয়টা কিন্তু স্পষ্ট।

 

Advertisement