নির্বাচনী বাংলায় শনিবার যে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের নতুন স্লোগান প্রকাশ্যে আনবে একথা আগেই জানিয়েছিল। বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই ‘দিদিকে বলো’, ‘বাংলার গর্ব মমতা’র পর নয়া স্লোগানে মুড়ে দেওয়া হল তৃণমূল ভবন। সাংবাদিক বৈঠকে সেখানেই উদ্বোধন হবে নতুন স্লোগান 'বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়'। শনিবার এই স্লোগানের আত্মপ্রকাশের মুহুর্তে উপস্থিত থাকতে পারেন সুব্রত বক্সি, পার্থ চ্যাটার্জি–সহ দলের শীর্ষ নেতারা।
ভোটের আগে বাংলার মানুষদের আবেগকেই হাতিয়ার করে এগোতে চাইছে মমতা বিগ্রেড। নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বহিরাগত বলে তোপ দেগেছেন মমতা। আর সেখানেই নিজেকে ঘরের মেয়ে প্রতিপন্ন করে ভোটবাক্স সামলানোর মরিয়া চেষ্টা বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহল মহল।
শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দল ছাড়ার আগে কয়েক মাস ধরে বেসুরো বেজেছিলেন। দলীয় সভা হোক বা মন্ত্রিসভার বৈঠক, কোনও খানেই দেখা যেত না তাঁদের। তার মধ্যে সাধারণ কর্মী থেকে দলের নেতা-মন্ত্রীরা যেভাবে শিবির বদল করছেন তাতে একুশের ভোটের আগে চিন্তা বাড়ছে বই কমছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুভেন্দু দলছাড়ার আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের জনসভা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে দেখা মেলেনি অধিকারী পরিবারের কারোর। কিন্তু দলের অন্যান্য সাংসদ-বিধায়করা কিন্তু হাজিরা দিয়েছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় যেখানে মমতা-অভিষেকের হাইভোল্টেজ সভা হল তাতেই অনুপস্থিত থাকলেন পাঁচ-পাঁচজন সাংসদ বিধায়ক। বিষয়টির দিকে যেমন নজর রাখছে বিরোধী শিবির, তেমনি স্বস্তিতে নেই তৃণমূলনেত্রীও।
২০০৯ সালে তৃণমূলের উত্থানের সূচনালগ্ন থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা তাদের কাছে শক্ত ঘাঁটি। এই দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই প্রথম জেলাপরিষদ দখল করেছিল তৃণমূল। তার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ঘাসফুল শিবিরকে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এই জেলার চারটি আসনেই দাঁত ফোঁটাতে পারেনি বিজেপি। লোকসভা ভোটের নিরিখে বিধানসভা ভিত্তিক ফলে ৩১টি বিধানসভা কেন্দ্রেই এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থীরা। তার আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ৩১টির মধ্যে ২৯টিতে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। তাই নীল বাড়ির ক্ষমতা দখলে রাখতে এ বারও সে রকম ফলেরই পুনরাবৃত্তি চাইছে শাসক দল।