পুরুলিয়া হল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেদিনীপুর বিভাগে অবস্থিত এই জেলার গুরুত্ব অনেক। কেবল নির্বাচনের ক্ষেত্রে নয়, পর্যটনেও। ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যই এই জেলাটিকে স্বাতন্ত্র্য করে তুলেছে বাকি জেলার থেকে। বাংলার অন্যতম ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় স্থানগুলি পুরুলিয়াতেই অবস্থিত।
অযোধ্যা পাহাড়, জয়চণ্ডী পাহাড়, গড় পঞ্চকোট, বড়ন্তি, ঝালদা ইত্যাদি স্থানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এছাড়াও ছৌ নৃত্য, টুসু, ভাদু, করম পরব উৎসব দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও পর্যটকরা আসেন এই জেলায়। সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক দৃশ্যই ঋদ্ধ করেছে পুরুলিয়াকে। একই সঙ্গে পাহাড় এবং ঘন অরণ্যর সমাহার পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।
ক্লান্ত শহরবাসীরা প্রকৃতির কোলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ উপভোগ করতেই পুরুলিয়ায় ফিরে আসেন বারবার। পশ্চিমবঙ্গের এই পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাটি ছোটনাগপুর মালভূমির একটি অংশ। সেই কারণেই পুরুলিয়া পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম খনিজ সমৃদ্ধ জেলা। এই জেলায় প্রাপ্ত খনিজপদার্থগুলির মধ্যে কয়লা, ফসফেট, চিনামাটি, ডলোমাইট, বালি, কোয়ার্টজ, কায়ানাইট, গ্রাফাইট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। মূলত জেলার উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত দামোদর উপত্যকা ও পাঞ্চেৎ পাহাড়ের মধ্যবর্তী অঞ্চলে কয়লা পাওয়া যায়। চিনামাটি পাওয়া যায় রঘুনাথপুর, ধুতারে, ঝালদা, কালাঝোড় ইত্যাদি অঞ্চলে।
পুরুলিয়ার পর্যটনের মূল আকর্ষণ হল পাহাড়, বন এবং প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা, প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদি। লাল মাটি ও বসন্তের সময় পলাশের 'রাঙা হাসি' সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও দ্বিগুণ সমৃদ্ধ করে তোলে। পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে কম জনঘনত্ব বিশিষ্ট জেলায় মূলত বাঙালি ও সাঁওতাল-সহ বিভিন্ন উপজাতির সম্প্রদায় রয়েছে। গান এবং নাচ সেই সকল উপজাতির মানুষের জীবনে অন্তর্নিহিত অঙ্গ।