'দশ বছর তৃণমূল (TMC) ও সাত বছর বিজেপি (BJP) মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে, শুধু এখানকার মাল ওখানে আর এখানকার মাল ওখানে, শোরুম দু'টো আলাদা, কিন্তু গুদামটা কালীঘাটে, তাই আমাদের গুদাম ও শোরুম দু'টোকেই দেখতে হবে', শনিবার (Saturday) বাঁকুড়ার (Bankura) সোনামুখী বি জে হাই স্কুলে দলীয় এক কর্মীসভায় এসে এই ভাষাতেই কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলকে বিঁধলেন সিপিআইএম (CPIM) নেতা তথা পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম (Mohammed Selim)। শোলে সিনেমার উদাহরণ টেনে সেলিম বলেন, 'তৃণমূল ও বিজেপি একই মুদ্রার এপিঠ - ওপিঠ, কোন পার্থক্য নেই।' বিজেপি ও তৃণমূল ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন এই সিপিআইএম নেতা।
এদিন কৃষক আন্দোলন নিয়েও বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করেন সেলিম। তাঁর প্রশ্ন, 'দিল্লির সরকার যদি এতটাই কৃষক দরদি হয় তাহলে কেন রাস্তা কেটে, রাস্তার পেড়েক পুঁতে আন্দোলনকারীদের দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে?' একইসঙ্গে বিজেপি নেতাদের কৃষক ও আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজনের বিষটিকেও কটাক্ষ করেন সেলিম। বলেন, 'জে পি নাড্ডা নাটক করছেন। নাটক আর বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য আছে। চার্টার্ড ফ্লাইটে এসে, ফাইভ স্টার হোটেল থেকে আদিবাসী - তপশিলিদের বাড়িতে কলাপাতায় বাসমতি চালের ভাত খাবেন। কিন্তু তাঁরা কোনও দিন খোঁজ নিয়েছেন আমাদের আদিবাসী পরিযায়ী শ্রমিকদের সংসার কিভাবে চলে। এগুলো সব নাটক। আসলে তাঁরা খাওয়াটা ভালো বোঝেন, গোটা দেশকে কুঁরে কুঁরে খাচ্ছেন, আর এখানে এসে আদিবাসী তপশিলিদের বাড়িতে খাচ্ছেন।'
প্রসঙ্গত সাম্প্রতিককালে রাজ্যে এসে বারেবারেই কৃষক, আদিবাসী, বাউল পরিবারে মধ্যাহ্নভোজন সারছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। রাজনৈতিক মহল মনে করছে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ককে ধরে রাখতেই বিজেপির এই কৌশল। শনিবার মালদায় কৃষকদের সঙ্গে খিচুড়ি খান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। এক্ষেত্রে দিল্লির কৃষক আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির মাঝে বাংলার কৃষকদের মন জয় করতেই বিজেপির এই স্ট্র্যাটেজি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।