পশ্চিমবঙ্গের এক বর্ধিষ্ণু জেলা বাঁকুড়া। শিক্ষা সংস্কৃতি থেকে শিল্প চর্চা, সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন সময় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে এই জেলা। একদিকে যেমন বছরের পর বছর মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাঁকুড়া, অন্যদিকে তেমনই এই জেলাই শ্রোতাদের উপহার দিয়েছে বিষ্ণুপুর ঘরানার একের পর দিকপাল শিল্পী। এখানেই শেষ নয় কুটির শিল্পেরও অমূল্য ভাণ্ডার বাঁকুড়া জেলা। বাঁকুড়ার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে নানা রকমের কুটির ও হস্তশিল্প। আর সেই সমস্ত কুটির শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জেলার বহু মানুষের রুজিরুটি।
বাঁকুড়ার (Bankura) হস্তশিল্পের অন্যতম ডোকরা (Dhokra)। জেলার শিল্পীদের তৈরির ডোকরার সামগ্রী বারেবারই পছন্দ হয়ে উঠেছে ক্রেতাদের। যদিও ডোকরা শিল্পীদের একাংশ জানাচ্ছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে বিবিধ প্রতিবন্ধকতা। কখনও সহজে ঋণ পাওয়া যায় না, তো কখনও আবার উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। রয়েছে আরও সমস্যা।
এই বিষয়ে জেলার এক ডোকরা শিল্পী ছন্দক বরাটের অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পের আওতায় ঋণ নিতে গিয়ে রীতিমতো হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি ঋণের মোট অঙ্কের চেয়ে অনেক বেশি বন্ধক রাখতে হয়েছে বলেও দাবি তাঁর। এক্ষেত্রে এমন অনেক শিল্পী রয়েছেন যাঁরা এখনও ঋণ পাননি বলেই জানাচ্ছেন ছন্দকবাবু। পাশাপাশি উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি করার ক্ষেত্রেও শিল্পীদের অনেককেই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় বলে জানাচ্ছেন ছন্দক বরাট। বিশ্ববাংলা, বঙ্গশ্রী বা মঞ্জুশার তরফে সমস্ত ডোকরা শিল্পীর থেকে তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রী কেনা হয় না বলেই জানাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও রয়েছে করের সমস্যা।
তাহলে নির্বাচনের পরে যে সরকার গঠন হবে তাদের কাছে কী আবেদন থাকবে আপনাদের? জবাবে ছন্দক বরাট বা তাঁর মতো শিল্পীরা জানাচ্ছেন, সহজে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করুক সরকার। একইসঙ্গে মকুব করা হোক কর। পাশাপাশি সমস্ত শিল্পীদের তৈরি সামগ্রী বিক্রির ক্ষেত্রেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক সরকার, এমনটাই আবেদন ছন্দকবাবুদের। তবে শিল্পীদের এই আবেদন সরকারের কাছে কতটা গৃহিত হল, তা অবশ্য সময় বলবে।