এক তৃণমূল (TMC) কর্মীকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান (East Burdwan)-এর মঙ্গলকোট (Mangalkote) এমনই অভিযোগ উঠেছে। তাঁর পরিবার এবং শাসকদলের দাবি, এই ঘটনা ঘটিয়েছে বিজেপি (BJP)। তারা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
টিএমসি-এর মঙ্গলকোটের ১৯৮ নম্বর বুথের সভাপতি সঞ্জিত ঘোষ দুষ্কৃতী হামলায় মারা গিয়েছেন। পরিবার ও তৃণমূলের দাবি, খুনের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে। ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের নিগণ গ্রামের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে রাস্তায় ফেলে,লাঠি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে বেধড়ক মারের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। আহত মঙ্গলকোট সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ইব্রাহিম শেখ। হেলমেট থাকার কারণে চোট কম লেগেছে। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে টিএমসির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করা হয়েছে।
সঞ্জিত ঘোষের স্ত্রী জানান, দুপুরে তিনি যখন নিগণ গ্রামে বাড়ি ফিরছিলেন বাইক নিয়ে, তখন রাস্তায় দড়ি বেঁধে তাকে বাইক থেকে ফেলে দেওয়া হয়। সঞ্জিত ঘোষ ও ইব্রাহিম শেখ পড়ে যেতেই ৫থেকে ৭ জন লাঠি, রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। সঞ্জিত ঘোষের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করা হয়। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
বিজেপি কর্মী বিকাশ, সতীশ ঘোষ , শিশির ঘোষ , হাঁসু যশের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ করেন স্ত্রী আশালতা ঘোষ। তিনি বলেন, তাঁর স্বামী টিএমসি করতেন। বুথ সভাপতি ছিল। তাঁকে বিজেপি থেকে চাপ দেওয়া হতো অনৈতিক কাজ করার জন্য। কিন্তু তার স্বামী তাতে সম্মত না হওয়ায় আগেও তার ওপর হামলা হয়েছে বিজেপির শিশির ঘোষের নেতৃত্বে। তিনি দোষীদের শাস্তির দাবি করেন । তিনি বলেন তার ছোট ছেলে নিয়ে তিনি স্বামী হারা হলেন । তার স্বামী টিএমসি করতেন বলেই তাকে খুন করা হলো।
স্ত্রী আশালতা ও তৃণমূল যুব কংগ্রেস জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদার ও পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার অভিযোগ, বিজেপি রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁয়ের মঙ্গলকোটে আয়োজিত এক সভায় উস্কানিমূলক ভাষণের পরই আক্রমণ টিএমসি বুথ সভাপতি সঞ্জিত ঘোষের উপর। যার ফলে তার মৃত্যু হয়। সভাধিপতি তথা টিএমসি নেত্রী শম্পা ধাড়া বলেন, বিজেপির খুনের রাজনীতি করছে মানুষের জীবন নিয়ে। ভোটের আগে পরিযায়ী হয়ে আসছে আর এই সব করছে।
রাসবিহারী হালদার দাবি করেন, মঙ্গলকোট এলাকায় টিএমসির ভাল সংগঠন । তাই বিজেপি জায়গা না পেয়ে এসব করছে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বিজেপির পূর্ব বর্ধমান কাটোয়া জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে হয়েছে ঘটনা। এদিকে, ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় মঙ্গলকোট জুড়ে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।