ভোটের মুখে একের পর এক বিদ্রোহ দলে। জেলায় জেলায় বিভিন্ন নেতা, বিধায়ক প্রকাশ্যে উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ। ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী বিদায়ের পথে। একাধিক নেতা বেসুরো। এ হেন পরিস্থিতিতে নতুন করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান তথা পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। জিতেন্দ্রর মানভঞ্জনে এ বার উদ্যোগী হলেন খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিন দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৮ ডিসেম্বর কলকাতা ফিরছেন। ফিরেই জিতেন্দ্রর সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। মুখোমুখি কথা বলবেন আসানসোলের বর্ষীয়ান নেতার সঙ্গে। ডিসেম্বর ক্যামাক স্ট্রিটের বাড়িতে জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের। সেই বৈঠকে ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরেরও থাকার কথা। কিন্তু এ বার ১৮ ডিসেম্বর খোদ মমতার সঙ্গেই দেখা করছেন জিতেন্দ্র। তাই ফিরহাদ ও অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকে থাকছেন না তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। জিতেন্দ্র তিওয়ারি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আসানসোল পুরসভাকে নিতে দেওয়া হয়নি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্পে মনোনীত করেছিল আসানসোলকে। কিন্তু রাজ্য সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ২ হাজার কোটি টাকা নিতে পারেনি আসানসোল পুরসভা। রাজনৈতিক কারণেই ওই প্রকল্পের সুবিধা নিতে দেওয়া হয়নি আসানসোল পুরসভাকে। রাজ্য সরকারের তরফে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রাখা হয়নি।
আলোচনার আগে আরও উত্তপ্ত বাক্য় বিনিময়। আসানসোলের পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারির চিঠি নিয়ে মুখ খুললেন ফিরহাদ হাকিম। বিজেপি হয় তো ওকে ভুল বোঝাচ্ছে। ফিরহাদ বলেন, 'জিতেন আমার সঙ্গে এটা নিয়ে কখনও কথা বলেনি। আজকে কেন চিঠি দিয়েছে জানি না। ওর সঙ্গে আমার অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক। আমার ছোট ভাইয়ের মতো। বহুবার কথা হয়েছে কিন্তু এটা নিয়ে কখনও কিছু বলেনি। ভোটের আগে বিজেপি ওকে ভুল বোঝাচ্ছ। কেউ গ্যাস খাওয়াচ্ছে।'
যদিও বিজেপিতে যাওয়া বা গ্যাস খাওয়ানোর কথা শুনে চটেছেন জিতেন্দ্র। পুরমন্ত্রী সম্পর্কে পাল্টা তিনি বলেন, 'আমি যদি বলি উনি পাকিস্তানের ইমরান খানের পার্টির কথায় চলছেন। এসব কথা একদম অনভিপ্রেত। বিজেপি ওঁকে ফোন করতে পারে, আমায় নয়। লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি যখন একের পর এক পার্টি অফিস দখল করছিল তখন উনি কোথায় ছিলেন। তখন আমিই পার্টি কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছি।'