নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়ে গিয়েছে দিন কয়েক আগেই। জোর কদমে নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে সব পক্ষ। কারও নীতি একটা চলো, তো কেউ আবার জোট বেঁধে। বিগত দশ বছরের জণকল্যাণমুখী কাজকে বিচার করেই মানুষ তাদের আশীর্বাদ দেবেন বলে আত্মপ্রত্যয়ী তৃণমূল (TMC)। অন্যদিকে তৃণমূল পরিচালিত সরকারের গত দশ বছরের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া বিজেপি (BJP)। আর সেক্ষেত্রে মানুষ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। পিছিয়ে নেই বাম (Left Front) - কংগ্রেসও (Congress)। বিজেপি ও তৃণমূল একই মুদ্রা এপিঠ ওপিঠ, তাই রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে ও সাম্প্রদায়িকতাকে রুখতে দুই ফুলকে আটকানোর বার্তা নিয়ে মানুষের সামনে হাজির তারাও। ব্রিগেডে বাম - কংগ্রেসের মুখেও শোনা যায় পরিবর্তনের কথা।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে কী এই পরিরবর্তন? রাজনীতির গলি বেয়ে ১০ বছর আগে ফিরে গেলে দেখা যাবে, ২০১১ সালে এই পরিবর্তনের স্লোগান তুলেই ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় লড়াই ছিল পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তনের। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, নেতাইয়ের মতো ঘটনাকে সমনে রেখে রাজ্যে পরিবর্তনে হাওয়া তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই রাজ্যে এসেছিল পরিবর্তন। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল হলেও আদতে পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তনই হয়নি। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, নারী নিরাপত্তা, শিল্প ও কর্মসংস্থানের মতো বিষয়গুলিকে বারেবারেই হাতিয়ার করেছে তারা। বিরোধীদের প্রশ্ন, বছর বছর রাজ্যের শিল্প সম্মেলন এসেছে, শিল্প এসেছে কই? নিরাপত্তার স্বার্থে এতগুলো কমিশনারেট করা হয়েছে, তাতেও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসেনি কেন?
তাই এবার রাজ্যে আসল পরিবর্তন আনার কথা বলছেন বিজেপির ছোট থেকে বড়, সমস্ত নেতার। শুরু হয়েছে পরিবর্তন যাত্রাও। বিজেপির দাবি, আসল পরিবর্তন এলে কৃষি থেকে শিল্প বা স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষা সব ক্ষেত্রেই বদলে যাবে পরিস্থিত। জোয়ার আসবে কর্মসংস্থানে। গড়ে উঠবে সোনার বাংলা। একইভাবে বাম কংগ্রেসেরও দাবি রাজ্যে যে বিভাজনের রাজনীতি হচ্ছে এবং সবক্ষেত্রে বাংলা যেভাবে পিছিয়ে পড়ছে, তার থেকে একে বের করতে হলে আনতে হবে পরিবর্তন। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন বাস্তবেই অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, আইনশৃঙ্খলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সার্বিক পরিবর্তন আনতে ঠিক কী কী পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন বিরোধীরা? যদি বাস্তবেই ২০২১-এ মানুষ তাঁদের সুযোগ দেন, তাহলে কীভাবে আসবে বাংলার সেই কাঙ্খিক পরিবর্তন? উত্তর কিন্তু এখনও অজানা। এমনকি এই নিয়ে মানুষও ধোঁয়াশায় বলেই মনে করছেন রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা। তবে নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ অবশ্য এখনও বাকি। সেক্ষএে দেখার বাংলার আগামীর জন্য সেখানে কোন দিশা নির্ধারণ করে রাজনৈতিক দলগুলি।