নয়া কৃষি আইন কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই আইন কালোবাজারি-লুঠেরাদের সাহায্য করছে। নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে এর আগে কেন্দ্র সরকারকে এভাবেই তুলোধোনা করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে ট্যুইট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে এরাজ্যেও বিক্ষোভের কর্মসূচি ঠিক করতে আগামিকাল বৈঠক ডেকেছেন তৃণমূলনেত্রী।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক সংগঠনের বৈঠক মঙ্গলবার ফলপ্রসূ হয়নি। বরং বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য কেন্দ্র যে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, তা খারিজ করে দেয় কৃষক সংগঠনগুলি। তাদের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। এই অবস্থায় কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফের আরেক দফা বৈঠকে বসেছে কেন্দ্র। আর তার মাঝেই ফের একবার কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী।
সংসদের গত বাদল অধিবেশনে তিনটি কৃষি বিল পাশ করায় কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁদের দাবি, চাষিদের স্বার্থেই নয়া আইন কার্যকর করা হয়েছে। পালটা বিরোধীদের অভিযোগ, কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিতেই এই বিল আনা হয়েছে। সেই সুর শোনা গেল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর গলাতেও। নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ২৭ নভেম্বর ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।
বৃহস্পতিবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইট করে বলেন, "আমি কৃষকদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কে খুব উদ্বিগ্ন। কেন্দ্রকে অবশ্যই কৃষক বিরোধী বিল প্রত্যাহার করতে হবে। আর এখনি তা না হলে আমরা রাজ্য ও দেশজুড়ে আন্দোলন করব। প্রথম থেকেই, আমরা এই কৃষকবিরোধী বিলগুলির তীব্র বিরোধিতা করে আসছি।"
I am very much concerned about the farmers, their lives and livelihood. GOI must withdraw the anti-farmer bills. If they do not do so immediately we will agitate throughout the state and the country. From the very start, we have been strongly opposing these anti-farmer bills.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 3, 2020Advertisement
তৃণমূলনেত্রী ট্যুইটে জানান শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ দলীয় বৈঠকের আয়োজন করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী আইন কীভাবে মানুষের উপর প্রভাব ফেলছে, যার ফলস্বরূপ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের রূপরেখাও তৈরি হবে আগামিকালের বৈঠকে। আরেকটি ট্যুইটে তৃণমূলনেত্রী রেলওয়ে, এয়ার ইন্ডিয়া, কয়লা, বিএসএনএল, ভেইল, ব্যাঙ্ক, প্রতিরক্ষা সহ একাধিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বেসরকারীকরণ নীতি তীব্র বিরোধিতা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, দেশের কোষাগার বিজেপি ব্যক্তিগত সম্পদে রূপান্তরিত করতে। যার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেন তিনি।
রাজ্যসভায় কৃষি বিল পাশ হওয়ার পরও কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে এই কৃষি আইনকেই হাতিয়ার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই আইনের বিরোধিতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে এবার তৃণমূলনেত্রী পথে নামতে পারেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।