শুক্রবার হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড মেট্রোর যাত্রা শুরু হয়েছে। এই পথে সময় লাগছে ১০ মিনিট। ভাড়া ১০ টাকা। ব্যস্ত সময়ে ওই একই গন্তব্যে বাসে যেতে সময় লাগছে ৪৫ মিনিট। ভাড়া ১৫ টাকা। দুটি ভ্রমণের মধ্যে পার্থক্য ৩৪ মিনিটেরও বেশি। হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনে ঢোকার জন্য বিশৃঙ্খল জিটি রোডের পাশ দিয়ে হাঁটতে হবে। যার দুই পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বহু স্টল রয়েছে। কিন্তু স্টেশনে ঢুকলেই মনে হয় অন্য জায়গা। একটি এসকেলেটর কনকোর্স থেকে প্ল্যাটফর্মের দিকে নিয়ে যায়। তারপরেই গমগমে টিকিট কাউন্টার।
ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ২-এ আসার সঙ্গে সঙ্গে দরজাগুলি প্ল্যাটফর্মের পর্দার দরজাগুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে খুলে যাচ্ছে। গতকার প্রথম ট্রেনটি ১০.২৬ মিনিটে এসপ্ল্যানেডের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। প্রথমদিন প্রচুর ভিড় হয়েছে নতুন এই মেট্রোয়। উৎসাহ, উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। বেশিরভাগ যাত্রীই তাঁদের ফোনে যাত্রা রেকর্ড করছিলেন। এখানে কোনও বোর্ডই "ফটোগ্রাফি নিষিদ্ধ" করেনি এখনও।
প্রথম স্টপেজ দু'মিনিট কয়েক সেকেন্ড পরেই। হাওড়া একটি ডুয়াল-ডিসচার্জ স্টেশন। যার অর্থ যাত্রীদের জন্য উভয় দিকের দরজা খোলা। ট্রেনটি প্রায় ৩০ সেকেন্ডের জন্য হাওড়ায় থামছে। হাওড়া থেকে ট্রেন ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফের ভিড়। সিট নেই অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে থাকছেন। তারপর গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রো চলতে শুরু করবে। টানেলে নীল আলো জ্বলছে। যাত্রীদের সমবেত চিৎকার, 'গঙ্গা এসে গেছে।'
ট্রেন হাওড়া থেকে ছাড়ার আড়াই মিনিট পরে মহাকরণ স্টেশন। কলকাতার ঐতিহ্যবাহী অফিস পাড়া ডালহৌসিতে যাওয়া যাত্রীরা অনেকেই নেমে যাচ্ছেন। মহাকরণ থেকে এসপ্ল্যানেডের যাত্রায় দু'মিনিটেরও কম সময় লাগছে।
বাস
সকাল ১১.৫০ মিনিটের দিকে হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনের বাইরে জিটি রোডে বেশ কয়েকটি বাস ছিল। তারা যাত্রী তুলতে শামুকের গতিতে চলে। অর্ধেকের বেশি আসন খালি থাকায় কন্ডাক্টার যাত্রী তুলতে ব্যস্ত। বড়বাজার, টি বোর্ড, ডালহৌসি, ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট...। ইত্যাতি স্টপেজের নাম চিৎকার করে হাঁকডাক করে যাত্রী তুলছেন কন্ডাক্টার। হাওড়া ময়দান থেকে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ১.৫ কিলোমিটার যেতেই বাসগুলি ১০ মিনিট সময় নিয়ে থাকে। হাওড়া ব্রিজ এবং এসপ্ল্যানেডের মধ্যে পরবর্তী ৩ কিমি যেতে আরও ৩৫ মিনিট। সেইসঙ্গে যানজট। ক্রমাগত হর্ন। পুলিশের লাঠির বাড়ি। গরম, ঘাম।