জরুরি (Emergency) অবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)-কে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (TMC MP Mahua Moitra)। বিজেপি-শাসনকে জরুরি অবস্থার সঙ্গে তুলনা করলেন। শনিবার টুইট করে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi), কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা নিয়ে কংগ্রেসের সমালোচনা করেছিলেন। এদিন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (TMC MP Mahua Moitra) নাম না করে তাঁদের কটাক্ষ করেন। তিনি টুইটে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, জরুরি অবস্থার কালো দিন কখনই ভোলা যাবে না। ঠিকই স্যর, আপনার সরকার রোজ সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে!
PM tweets “dark days of Emergency can never be forgotten”
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) June 26, 2021
Yes, Sir, your government making sure to remind us every single day!
এদিকে, ২৫ জুন স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তারিখ। ১৯৭৫ সালে এই দিনে দেশে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। জরুরি অবস্থা জারির জন্য প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
ওই ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসকে এখনও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কটাক্ষ করে। তবে ওই পদক্ষেপের 'মাথা' ছিলেন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। ইন্দিরা গান্ধীকে তিনিই জরুরি অবস্থা জারি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে তিনি সে কথা এড়িয়ে গিয়েছিলেন।
ইন্ডিয়া টুডে-র এক সাক্ষাৎকারে এ ব্য়াপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আপনি কি যুক্ত ছিলেন? সিদ্ধার্থশঙ্করের জবাব ছিল, আমি এ ব্য়াপারে কোনও মন্তব্য করব না।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন থেকে ১৯৭৭ সালের ২১ মাস জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। ২১ মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ। ভারতের সংবিধানে জরুরি অবস্থা জারি করার কথা বলা রয়েছে। সংবিধানের ৩৫২ নম্বর ধারায় জরুরি অবস্থার কথা বলা রয়েছে।
১৯৭১ সালের লোকসভা ভোট ইন্দিরা গান্ধীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন রাজ নারায়ণ। পরে তিনি মামলা করেন। নির্বাচনে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ নারায়ণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। রাজ নরায়ণের হয়ে মামলা লড়েছিলেন শান্তি ভূষণ।
১৯৭৫ সালের ১২ জুন বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা রায় দেন, ইন্দিরা গান্ধী ভোটের সরকারি মেশিনারিকে কাজে লাগিয়েছেন। তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর পাশাপাশি তাঁকে ৬ বছর কোনও ভোটে লড়া থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেন।
এরপর বিরোধী দলগুলি সিদ্ধান্ত নেয় ২৫ জুন দেশে প্রতিবাদ জানাবে। এক সপ্তাহ চলবে সেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। কিন্তু ওইদিন গভীর রাতে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। ১৯৭৭ সালের লোকসভা ভোটে তার ফল পেয়েছিল কংগ্রেস।
শিল্প-সংস্কৃতির ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতও সেই তালিকায় ছিল। সম্প্রতি ইন্দিরা গান্ধীর নাতি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মেনে নিয়েছেন জরুরি অবস্থা জারি করা ঠিক হয়নি।