চিনির মাপকাঠি পেরিয়ে যাচ্ছে নামীদামি ব্র্যান্ডের শিশুদের খাবার। কিছুদিন আগে ঠিক এই কারণেই জনপ্রিয় পানীয় বর্নভিটাকে হেলথ ড্রিঙ্কস ক্যাটেগরি থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। বর্নভিটাতে চিনির মাত্রা নাকি বিপজ্জনক। এবার নেসলের বেবিফুড প্রোডাক্টেও তেমনই দেখা গেল। সুইস সংস্থা পাবলিক আই তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, সেরেল্যাকের চিনির পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। ভারতে যে সেরেল্যাক বিক্রি হচ্ছে তার প্রতিটা পাউচে ৩ গ্রামের বেশি চিনি রয়েছে।
পাবলিক আই-এর রিপোর্ট বলছে, সেরেল্যাকের নমুনা বেলজিয়ামের একটি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই টেস্ট করে ধরা পড়ে নেসলের সিরিয়াল জাতীয় ফুড প্রোডাক্ট, বেবি ফুড সেরেল্যাকে সুগার লেভেল অত্যাধিক। ছোট থেকেই এত চিনি খেলে বাচ্চাদের ওবেসিটি ও অন্যান্য ক্রনিক রোগ বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে জার্মানি, ব্রিটেন, আমেরিকায় যে বেবিফুড বিক্রি করে নেসলে তাদের ছিটেফোঁটাও চিনি নেই। কিন্তু ভারত, নেপাল, পাকিস্তান-সহ এশিয়ার দেশগুলোতে এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে যে সেরেল্যাক বিক্রি হয় তাতে প্রচুর চিনি রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তিন বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য কোনও খাবারে কৃত্রিমভাবে শর্করা বা মিষ্টিজাতীয় উপাদান যুক্ত করার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, দু’বছরের কম বয়সি শিশুদের খাদ্য তালিকায় কোনও রকম চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার রাখা একেবারই উচিত নয়। এই বয়সে বেশি চিনি খেলে পরবর্তী কালে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং টাইপ-টু ডায়াবিটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মস্তিষ্ক বা ব্রেনে দু’রকমের প্রভাব ফেলছে চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার। প্রথমত, মস্তিষ্কে এক বিশেষ রকমের প্রোটিনের কার্যকারিতা বন্ধ করে দিচ্ছে। এই প্রোটিন ব্রেনে ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ রুখতে সাহায্য করে। নানারকম নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ বা স্নায়বিক রোগের সম্ভাবনা বাড়ছে।