করোনা অতিমারি থেকে লকডাউন, এই নিউ নর্মালে কিছুটা মানসিক চাপেই রয়েছেন হয়তো। সেই দমবন্ধকর পরিবেশ থেকে একটু মুক্তির বাতাস নিতেই আবারও বেরিয়ে পড়ুন পাহাড়ের টানে। আর বাংলায় পাহাড় মানেই তো মূলত উত্তরবঙ্গ। যেখানে লেগেই থাকে পর্যটকদের (Tourist) ভিড়। পাহাড়ের কোলের বিভিন্ন ভার্জিন গ্রামগুলি হয়ে উঠছে তাঁদের নতুন ডেস্টিনেশন। সেখানকার মনোরম প্রকৃতির সঙ্গে উপরি পাওনা স্থানীয় বাসিন্দাদের উঞ্চ আতিথেয়তা। তবে হোটেলের পাশাপাশি নিত্য নতুন হোম- স্টেগুলি (Home Stay) এখন বাঙালি থেকে ভ্রমণপ্রেমীদের নতুন ট্রেন্ড।
পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বাসিন্দারা অন্যান্য জীবিকার পাশাপাশি সম্প্রতি খুঁজে পাচ্ছেন নতুন ব্যবসা- 'হোম স্টে'। বিলাসবহুল অত্যাধুনিক হোটেল থাকলেও বেশিরভাগ ট্যুরিস্টরা এখন পছন্দ করছেন ছিমছাম হোম স্টেগুলিতে থাকতে। অতিমারীর জেরে পর্যটনশিল্প খুব বড় ধাক্কা খেয়েছে। এরপর আনলক পর্বে ধাপে ধাপে খুলতে শুরু করেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। আর ভ্রমণপিপাসু বাঙালিরা একটু সুযোগ পেলেই সপরিবারে ছুটছেন ট্রিপে। ডুয়ার্স, সিকিম, দার্জিলিং,কালিম্পং মিরিক ছাড়াও রয়েছে আরও একাধিক কম জানা নাম।
সুযোগ-সুবিধা
দেখতে ছোট খাটো হলেও সুবিধা ও ব্যবস্থাপনায় হোটেলের থেকে কোন অংশেই কম নয় এই হোম স্টে। সব রকমের সুবিধা পাওয়া যায় বেশিরভাগ হোম স্টেগুলোতে। তার সঙ্গে থাকে সেখানকার মাটির এবং লোকেদের একটা বিশেষ ফ্লেভার। যার ফলে যেন অজানা পাহাড়ি গ্রামগুলোর মানুষগুলোর সঙ্গে একটু বেশি করে মিশে যাওয়া যায়। সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি অনেক জায়গায় লোকো গান- বাজনার ব্যবস্থাও থাকে।
সাধ্য মতো বাজেট
এধরনের হোম স্টেগুলির আরও একটা বড় সুবিধা হল, হোটেলের তুলনায় অনেকটাই পকেট ফ্রেন্ডলি হয়। আগে স্পটে গিয়ে বুকিং করতে হতো। যত দিন যাচ্ছে ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রি-বুকিং ব্যবস্থা থাকছে।
সোলো ট্রিপের জন্যে বেস্ট
হোম স্টেগুলোতে থাকার আরও একটি সুবিধা রয়েছে। ট্রিপে যারা একা ঘুরতে এবং নিজের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসেন তাঁদের জন্য এটা যেন আদর্শ। একে অজানা রাস্তাঘাট, থাকার জায়গা, তার মধ্যে এরকম ছোট্ট, ছিপছাম ও সুন্দর করে সাজানো জায়গায় থাকা। যেন আরও বেশি করে হারিয়ে যাওয়া যায় প্রকৃতির কোলে।
সুরক্ষা
ট্রিপে অন্য কিছুর সঙ্গে আরও একটা চিন্তার বিষয় থাকে। সেটা হল থাকার জায়গা কতটা সুরক্ষিত? বিশেষত অচেনা ও লোকালয় থেকে একটু দূরের গ্ৰামগুলির ক্ষেত্রে সেখানকার সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন অনেকের মনে থেকেই যায়।বলা চলে সেখানকার স্থানীয় মানুষেরাই এই থাকার জায়গাগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তৈরি করেন। বাইরের কারো মালিকানা থাকলেও লিজ বা দায়িত্বে থাকেন স্থানীয় মানুষরাই। এটাই তাঁদের সারা বছরের জীবিকা। তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে কপালে ভাঁজ ফেলার দরকার হয় না।
আরও পড়ুন: Holiday Plan: ২০২১-এর এই তারিখ গুলো নোট করে নিন, বন্ধুদের সঙ্গে ছোট্ট ট্রিপ জমে যাবে
তাহলে আর চিন্তা না করে, পরের ছুটির দিনগুলো দেখে নিন আর ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন ঘুরতে। মনে রাখবেন মেঘপিয়নের দেশে গেলে তবেই মনের ব্যাকুলতা ও মন খারাপের দিস্তা সবটাই কেটে যাবে। নতুন করে আবার সেই প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌঁড়ে সামিল হওয়ার এবং সৃজনশীল কাজ করার হয়তো এটাই হবে আপনার চাবিকাঠি। বেড়িয়ে এসে খুঁজে পাবেন এক নতুন 'নিজেকে'!