Dooars Chilapata Jungle Tour: তোর্সা নদীর পাড় ঘেঁষে আলিপুরদুয়ার জেলার চিলাপাতা (Chilapata Forest) জঙ্গল। সবুজ সব জঙ্গলই হয়, কিন্তু এ জঙ্গলের সবুজ যেন অন্য রকম। নয়নাভিরাম নানা রকমের গাছের সমাহার। এই জঙ্গলে প্রচুর চালতা গাছ রয়েছে। অনেকে বলেন চালতা গাছের প্রাচুর্যের জন্য নাম চিলাপাতা। ডালে ডালে রংবেরঙের ফুল। তাকালেই চোখের আরাম। মনে করা হয়, ডুয়ার্সের অন্যতম বড় বনাঞ্চল চিলাপাতা।
বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, চিতাবাঘ, হাতি, গন্ডার, হরিণ, বাইসন ইত্যাদি। এই অঞ্চলে আছে কিংকোবরা সাপের উপদ্রব। জঙ্গলে ঘোরার সময় পা ফেলতে হয় খুব সাবধানে। অবশ্য চাইলেই জঙ্গলে যাওয়া যায় না। পারমিট করাতে হয় রেঞ্জ অফিস থেকে। তবেই দেখা যায় জঙ্গলের অপরূপ শোভা।
জঙ্গল সাফারি কখন?
সকাল ৫টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অচেনা জঙ্গলে একা একা না ঘোরাই ভাল। আছে গাইড। বেড়ানোর সময় নিতে হয় তাদের সাহায্য। তবে চিলাপাতা জঙ্গলটি এত বড়, সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়। এমন কিছু গভীর অঞ্চল রয়েছে, যেখানে পৌঁছয় না দিনের আলো। স্বাভাবিকভাবেই পৌঁছয় না পারেনি কোনও গাইড, পর্যটক।
ঐতিহাসিক জঙ্গল
একটা সময় কোচ রাজাদের মৃগয়াক্ষেত্র ছিল এই জঙ্গল। তাঁরা দলবেঁধে শিকার করতে আসতেন। জানা যায়, সংগ্রাম সিংহ চিলা রায় ছিলেন কোচরাজার সেনাপতি। দুর্দান্ত শিকারি। চিলের মতো তিনি ছোঁ মেরে শত্রুকে হত্যা করতেন। তাঁর নামেই এই জঙ্গলের নামকরণ হয়েছে চিলাপাতা, এটাও বলেন তিনি।
কোচ রাজাদের গড়ের ভগ্নাবশেষেরও দেখতে পাওয়া যায় চিলাপাতা জঙ্গলের মধ্যে। আছে নল রাজাদের গড়। মনে করা হয়, দুর্গটি গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়ের৷ প্রায় দু’হাজার বছরের পুরনো। আজও বিস্মিত হতে হয় ভগ্নপ্রাপ্ত দুর্গটি দেখে৷ আছে ‘কুনকি’ নামে একটি ওয়াচ টাওয়ার। সেখানে দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যাস্ত।
চিলাপাতা ফরেস্টে পাঁচটি বিটের অন্যতম মেন্দাবাড়ি। চিলাপাতার ঠাসবুনোট বনে এর অবস্থান। এখানে আছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি ইকো-ট্যুরিজম রিসর্ট। নাম ‘মেন্দাবাড়ি জঙ্গল ক্যাম্প’৷ এই রিসর্টে রাত্রিবাস পর্যটকদের কাছে স্বপ্নের চেয়ে কম নয়। সব মিলিয়ে বর্ষায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি মাথায় উত্তরবঙ্গের চিলাপাতা-মেন্দাবাড়ি ভ্রমণ মন্দ লাগবে না। পুজোর সময়ও দারুণ লাগবে।
কীভাবে যাবেন?
শিয়ালদা থেকে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে হাসিমারা রেলওয়ে স্টেশনে। অথবা উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে কোচবিহার। গন্তব্যটি হাসিমারা থেকে ১৮ কিলোমিটার এবং কোচবিহার থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে। দুই স্টেশন থেকেই গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন?
হাসিমারা, কোচবিহারে আছে রিসর্ট, হোটেল। থাকা যায় চিলাপাতা জঙ্গল ক্যাম্পে। যোগাযোগ : ৯৪৭৪৩-৮২৪৪২। এ-ছাড়া থাকা যায় মেন্দাবাড়ি জঙ্গল ক্যাম্পেও। আগে থেকে যোগাযোগ করে বুকিং করে যাবেন, কারণ প্রচুর বিকল্প নেই।