রেল ভারতের লাইফলাইন। দূরদূরান্তের অঞ্চলের মাঝে যোগসূত্র। বড় শহরগুলিতে লোকাল ট্রেনের উপর নির্ভর করে মানুষের জীবন-জীবিকা। দূরদূরান্তের শহর থেকে মানুষ আসেন মহানগরে। সারাদিন কাজের পর ফিরে যান বাড়ি। এভাবেই কাটে দিনের পর দিন। প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ ট্রেনে সওয়ার হন। লোকাল ট্রেনে যাঁরা যাত্রা করেন তাঁরা দেখেছেন মাথার উপর ঘোরে পাখা। গরমে পাখার হাওয়া দেয় একদণ্ড শান্তি। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন ট্রেনের পাখা কেন চুরি যায় না?
বিভিন্ন সময় ভারতীয় রেলে চুরির ঘটনা ঘটে। এমনকি শৌচালয়ের মগও খোয়া যায়। বিছানার চাদর, বালিশও পর্যন্ত খোয়া যাওয়ার খবর আসে। জানেন কি চোররা কখনও ট্রেনের ভিতরের পাখা চুরি করতে পারে না? মানে কখনও পাখা চুরি যাওয়ার কোনও অভিযোগ আসেনি। কারণ জানেন? আসলে রেলের পাখা এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা বাইরে আর কোনও কাজে লাগে না। এর পিছনে বিজ্ঞান কী?
প্রযুক্তি কী?
গরম থেকে যাত্রীদের স্বস্তি দিতে লোকাল ট্রেনে পাখা বসিয়েছে ভারতীয় রেল। ট্রেনের ফ্যান কেউ চুরি করলেও কোনও লাভ হয় না। আসলে রেলওয়ের ফ্যানগুলি একটি বিশেষ কৌশল ব্যবহার করা হয়। রেলের ফ্যানে রয়েছে বিশেষ প্রযুক্তি। যে কারণে পাখা কখনও চুরি যায় না। দুই ধরনের বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। প্রথমটি হল অল্টারনেট কারেন্ট অর্থাৎ AC। দ্বিতীয়টি হল ডাইরেক্ট কারেন্ট অর্থাৎ ডিসি। ঘরে এসি বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হলে সর্বোচ্চ শক্তি ২২০ ভোল্ট। অন্য়দিকে এই পাওয়ার হবে ডিসি-তে ৫,১২ বা ২৪ ভোল্ট। বাড়ির সমস্ত যন্ত্রপাতি শুধুমাত্র এসি-তে চালিত হয়। ৫ ভোল্ট থেকে ২৪ ভোল্ট পর্যন্ত বৈদ্যুতিক বা চার্জিং ডিভাইস ব্যবহার করা যায় ডিসি-তে। ট্রেনের পাখা চলে ১১০ ভোল্টে। এভাবেই এই ফ্যানগুলি তৈরি করা হয়। ফলে বাড়ির এসি কারেন্টে এই পাখা চলে না। কারণ পাওয়ার অনেক কম।
আরও পড়ুন- গ্যারান্টার ছাড়াই ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ, কারা কীভাবে বেনিফিট পাবেন?
ট্রেনে এই পাখাগুলি ৩-৩ লাইনে থাকে। প্রতিটি কোচের সামনে ৩টি এবং অন্য পাশে ২টি ফ্যান থাকে। একটি ফ্যানের তার কেটে যায় বা কাটাছেঁড়া করা হয়, তাহলে বাকি ফ্যানগুলিও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। গত কয়েক বছরে রেলে চুরি ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রেল জাতীয় সম্পদ। কোনওভাবে ক্ষতি করলে ৩৮০ ধারায় আইনি পদক্ষেপ করা হয়। শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ ৭ বছরের জেল এবং জরিমানা।