করোনা সংক্রমণ এড়াতে বনধ করা হল শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক। প্রতিদিন সরকারি রাজস্ব লোকসান প্রায় ১ লক্ষ টাকা।
করোনা সংক্রমনের কথা মাথায় রেখে রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিলিগুড়ির শালুগাড়ার বেঙ্গল সাফারি পার্ক বন্ধের ঘোষণা করল পার্ক কর্তৃপক্ষ। নতুন করে কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়া পর্যন্ত পার্ক বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, বেঙ্গল সাফারি পার্ক বনধে কয়েক লক্ষ টাকা লোকসান পার্ক কর্তৃপক্ষের।
উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্পে গতি আনতে ২০১৬ সালে শিলিগুড়ির শালুগাড়া এলাকায় ২৯৭ হেক্টর জমির ওপর রাজ্যে প্রথম উন্মুক্ত সাফারি পার্ক গড়ে তোলা হয়। যার প্রথম পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে আসা পর্যটকদের কাছে এই বেঙ্গল সাফারি পার্ক অন্যতম পছন্দের এবং আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
গত বছর করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে গোটা রাজ্যের লকডাউনের পাশাপাশি ১৭ মার্চ থেকে এই সাফারি পার্ক বনধ করে দেওয়া হয় বনদপ্তরের তরফে। তবে ফের ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সরকারের কোভিড গাইডলাইন মেনে ২ অক্টোবর খোলা হয়েছিল পার্ক। গত বছরের করোনা সংক্রমণ এর ধাক্কায় অনেকটাই লোকসান হয়েছিল পার্ক কর্তৃপক্ষের।
তবে সেই লোকসান মিটিয়ে ওঠার আগেই এপ্রিল মাস থেকে আবারও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কারনে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাজ্যের তরফে বেশ কিছু বিধিনিষেধ দিয়ে রাজ্যে আংশিক লকডাউনের কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। তাই এবার করোনার সংক্রমণ এড়াতে একইভাবে লকডাউনের পথেই হাঁটলো শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
পার্ক সূত্রে জানা গিয়েছে গত সাত দিনে পার্কে আশা পর্যটকদের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন। গতকাল পার্কে এসেছিলেন মাত্র ৮ জন। এবং তার আগের ছিল প্রায় ১০ জনের মত। সাধারণত পার্কে সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা ছুটির দিনগুলিতে পার্কে আসা পর্যটকদের সংখ্যা থাকে প্রায় ৩ হাজারের কাছাকাছি। এবং সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলিতে সেই সংখ্যা থাকে ১৫০০ থেকে ১৮০০ জন প্রায়। পার্ক সূত্রে আরও খবর সাধারণত সপ্তাহের কাজের দিনগুলিতে পার্কের প্রতিদিন গড় আয় হয় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। সেখানে সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য ছুটির দিনগুলিতে পার্কের আয় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১.৫০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
কিন্তু আবারও করোনার সংক্রমণে এই লকডাউনের কারণে পার্কের লোকসানের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে অনেকটাই। শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কের রেঞ্জ অফিসার দীপক রসেইলি জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে পার্কে পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তিন চার দিনে পার্কে এসে ছিল মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন। তাই করোনার এই সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে রাজ্য সরকার আংশিক লকডাউনের কারণে করোনার সংক্রমনের বৃদ্ধির কারণে পার্ক বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে ততদিন পার্ক বন্ধ থাকবে।