ভুটান পাহাড়ে প্রবল বর্ষণের জেরে আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) পুরসভার ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কার্যত বন্যা পরিস্থিতি। কালজানি নদীর জল ঢুকে পড়ায় পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২০০টি পরিবার জলবন্দি। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন কালজানি নদীর বাঁধে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে আলিপুরদুয়ার পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডের নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পুরসভার ৫, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১৫ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিচু এলাকাগুলির কোথাও হাঁটু সমান তো কোথাও কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে পুরসভার অন্তর্গত ডিমা ও কালজানি নদীর কয়েকটি চর এলাকায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে প্রায় বুক সমান।
বাঁধের গেট না খোলায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ
অভিযোগ, কালজানির জল বেড়ে যাওয়ায় পরেও নদীবাঁধের গেটগুলি প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়নি। ফলে শহরের জমা জল বের হতে না পারায় পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। ঘটনায় পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। এদিকে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় নদী চর এলাকার বাসিন্দারা অস্থায়ীভাবে বাঁধে আগাম তাবু টাঙানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। সেচদফতর জানিয়েছে, শেষ ২৪ ঘন্টায় আলিপুরদুয়ারে ১১০ ও হাসিমারা ২০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, পাহাড়ি খরস্রোতা নদী হাউড়ি, বাংরি, তিতি ও দয়ামারার জলোচ্ছ্বাসে মাদারিহাট সদর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরের টোটোপাড়ার যোগাযোগ ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন। পানা নদীর জলোচ্ছ্বাসে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কালচিনি সদর থেকে সেন্ট্রাল ডুয়ার্স ও রাঙামাটি এলাকাও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। কোন যানবাহন চলাচল করছে না। সেচদফতরের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়ম গোস্বামী বলেন, কালজানি, তোর্সা, পানা, বাসরা, রায়ডাক, গরম ও সংকোশ সহ জেলার সব নদীর জলস্তরই বেড়েছে।
পরিস্থিতি পরিদর্শন প্রশাসনের
বুধবার সকালে আলিপুরদুয়ার পুর এলাকার জলমগ্ন ওয়ার্ডগুলি ঘুরে দেখেন মহকুমাশাসক প্রিয়দর্শিণী ভট্টাচার্য ও পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান মিহির দত্ত। তাঁরা জলবন্দি মানুষের সঙ্গে কথাও বলেন। মিহিরবাবু বলেন, বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের নিচু এলাকাগুলিতে বৃষ্টির জল জমে গিয়েছে। জমা জল বের করতে পাঁচটি পাম্প কাজে লাগানো হয়েছে। এখনই উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। পাশাপাশি মহকুমা শাসক বলেন, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।