ফের নাবালিকা নির্যাতনের ঘটনা। এবারের ঘটনাস্থল আলিপুরদুয়ার। বুধবার গভীর রাতে ১৩ বছরের ওই নাবালিকাকে ঘর থেকে তুলি নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ভোরে প্রাতঃভ্রমণে তাকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। অচৈতন্য ওই নাবালিকাকে প্রথমে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠান হয়। সেখানেও ঠিকমত চিকিৎসা সম্ভব নয় জানিয়ে নাবালিকাকে কলকাতায় পাঠান হয়।
বছর তেরোর ওই নাবালিকাকে গভীর রাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেই অনুমান স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হয়। আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের মহাকালগুড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের তিলাইপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। নাবালিকা নির্যাতনের এই ঘটনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার জেলা জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার সকালে নাবালিকাকে উদ্ধারের সময় সে বমি করতে শুরু করে। যদিও এই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেনি আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। উল্টে পুলিশ ঘটনাটি চাপা দেওয়া চেষ্টা করে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা হতে চলল, এখনও মেয়েটির মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়নি। তাই ঘটনাটি ধর্ষণ নাকি অন্যকিছু সেই বিষয়ে মন্তব্য করেনি জেলা পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওই নাবালিকা বাড়িতে তার মা ও কাকার সাথে থাকত। পরিবারের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। নাবালিকার মা মানসিক ভারসাম্যহীন এবং কাকা পেশায় দিনমজুর।
নাবালিকা নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সাধন সরকার বৃহস্পতিবার শামুকতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ। এদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ক্রমেই গ্রামবাসীরা সুর চড়াচ্ছেন। এদিন নাবালিকার বাড়িতে যান আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস। তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। অনুপবাবু বলেন, ওই নাবালিকাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। গোটা ঘটনা আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা যতীন রায় বলেন, সকাল বেলায় রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে দেখতে পাই। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণকান্ত বর্মন বলেন মেয়েটি বাড়িতে পৌছেঁই মাটিতে পড়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে সে বমি করেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তার কান ও মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছিলো। ঘটনার তদন্ত শুরু হলেই সব সামনে আসবে।