ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে (Black Fungus) আক্রান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গে মৃত্যু হল ২ মহিলার। মৃতারা হলেন গায়ত্রী পাসোয়ান ও অঞ্জলী ব্যাপারী। গায়ত্রী পায়োসান শিলিগুড়ির প্রধাননগর এলাকার বাসিন্দা। আর অপরজনের বাড়ি গজলডোবায়। করোনার মাঝেই এই দুটি ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা শিলিগুড়িজুড়ে।
কোভিড ১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝেই দেশজুড়ে ছড়িয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আতঙ্ক। এবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গের ২ মহিলার। ২টি ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন অঞ্চলে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (North Bengal Medical College and Hospital) সূত্রে খবর মঙ্গলবার মাঝরাতে মৃত্যু হয় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত গায়ত্রী পাসোয়ান নামে এক মহিলার। সম্প্রতি ওই মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর গত ২২ মে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হন। ২৩ মে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২৪ মে মহিলার ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিশ্চিত হতেই তাঁর অস্ত্রপচারের সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইএনটি বিশেষজ্ঞ রাধেশ্যাম মাহাতোর নেতৃত্বে অপথালমোলজি, এনাস্থেসিয়া, নিউরো বিভাগের দক্ষ চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়ে মোট ১২ জনের একটি বিশেষ দলের তত্ত্বাবধানে ওইদিনই তাঁর অস্ত্রপ্রচার হয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে চলে অস্ত্রপ্রচার৷ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের ফলে মহিলার উপরের চোয়াল, ডান চোখ, কপাল ও গালের একটি অংশ বাদ দিতে হয়। পরে চিকিৎসকরা জানান ৭২ ঘণ্টা না কাটলে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে মহিলার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। টানা ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর মঙ্গলবার রাতে সেপ্টিসেমিয়ায় মারা যান ওই মহিলা।
এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ইএনটি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক রাধশ্যাম মাহাতো বলেন, "সংক্রমণ মাথার অনেকটা অংশে ছড়িয়ে পড়েছিল। মহিলার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এরপর সেপ্টিসেমিয়ায় মারা যান তিনি।" অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, মহিলার অস্ত্রপ্রচার সফল হয়েছিল। কিন্তু ওই মহিলা আনকনট্রোল ডায়াবেটিক রোগী হওয়ায় তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর ছিল। তাছাড়াও যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাঁদের সেপ্টিসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হল না। অন্যদিকে ব্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে এদিনই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয় অঞ্জলী ব্যাপারী নামে আরও এক রোগীর। গত ২০ তারিখ কোভিড নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ৪ দিন আগে কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তাঁর। এরপর মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ মারা যান তিনি।