থ্যালাসেমিয়া (Thalassemia) আক্রান্ত ছোট্ট রোগিণীকে বাঁচাতে দরকার এক বোতল রক্ত। কিন্তু প্রচুর চেষ্টার পরেও মিলছে না নির্দিষ্টি গ্রুপের রক্ত। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক (Blood Bank) থেকেও। অবশেষ নিজের রক্ত দিয়ে রোগিণীর প্রাণ বাঁচালেন হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার। ঘটনাটি চন্দননগর (Chandannagar) মহকুমা হাসপাতালের। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার হাসপাতালে নিজের ঘরেই বসেছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার শান্তনু মুখোপাধ্যায়। সেই সময় হঠাৎই শান্তনুবাবুর ঘরে ঢোকেন এক মহিলা। কোলে তাঁর ৭ বছরের সন্তান। কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই মহিলা শান্তনুবাবুকে জানান তাঁর মেয়ের জন্য দরকার এক বোতল ও পজেটিভ গ্রুপের রক্ত। কিন্তু বহু চেষ্টার পরেও তা পাওয়া যাচ্ছে না। সন্তানকে বাঁচাতে অসহায় মায়ের ওই কান্না দেখে আর শান্ত থাকতে পারেননি শান্তনুবাবু। বেশ কয়েক জায়গায় ফোন করে রক্ত জোগার করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। অবশেষে নিজেই এগিয়ে আসেন রক্তদানের জন্য।
জানা গেছে, চণ্ডীতলা থানার কৃষ্ণপুর করালগাছার বাসিন্দা মনোজ রায় ও রুবি রায়ের একমাত্র সন্তান রুপসা। সম্প্রতি বাবা - মায়ের সঙ্গে চন্দননগরে মামার বাড়িতে আসে সে। মামার বাড়িতেই সে অসুস্থ হয়ে পরে। যার জেরে বুধবার চন্দননগর হাসপাতালের শিশুবিভাগে ভর্তি করা হয় তাকে। জানা যায় রুপসার হিমোগ্লোবিন অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে রক্ত দিতে হবে। কিন্তু কোনভাবেই রূপসার জন্য ও পজেটিভ গ্রুপের রক্ত জোগার করতে পারেনি তার পরিবার। অবশেষে এদিন বাধ্য হয়েই শিশুবিভাগ থেকে মেয়েকে কোলে নিয়ে সোজা হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের দ্বারস্থ হন রুবি রায়। শুক্রবার রক্ত দেওয়া হবে রূপসার শরীরে। শান্তনুবাবুর এই ভূমিকায় আপ্লুত রূপসার পরিবার।
এদিকে শান্তনুবাবুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল সুপার জগন্নাথ মণ্ডল। তিনি বলেন, "করোনা আবহে রক্তদান শিবির কম হওয়ায় রক্তের সংকট চলছে। সেই সংকটেরই শিকার হতে যাচ্ছিলো ছোট্ট রূপসা। কিন্তু শান্তনুবাবুই তাঁকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। শান্তনুবাবুকে অশেষ ধন্যবাদ।" পাশাপাশি হাসপাতালের সমস্ত কর্মীর কাছে তাঁর আবেদন, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত না থাকলে তাঁরাই যেন প্রয়োজনে এগিয়ে আসেন।