scorecardresearch
 

Gajoldoba MIfratory Birds Absent: পাখি বিলে দেখা নেই সাইবেরিয়ান পরিযায়ীদের, সৌন্দর্য হারাচ্ছে গাজলডোবা

Gajoldoba MIfratory Birds Absent: গতবারের তুলনায় এবছর শীতে গজলডোবায় (Gajoldoba) পরিযায়ী পাখির সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। পাখি গণনায় নিযুক্ত হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (HNAF)-এর কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানিয়েছেন, সদস্যরা গত প্রায় ৩০ বছরের সমীক্ষায় এবারেই গজলডোবায় সবচেয়ে কম পাখি এসেছে বলে জানা যাচ্ছে। 

Advertisement
গজলডোবা। ছবি সৌজন্য-নেচার বিয়ন্ড গজলডোবা। ছবি সৌজন্য-নেচার বিয়ন্ড

Gajoldoba MIfratory Birds Absent:গজলডোবা বলতে বাইরের পর্যটকদের কাছে ভোরের আলোর চোখ ধাঁধানো সরকারি পর্যটন কেন্দ্র। কিন্তু যাঁরা ভোরের আলো প্রকল্প তৈরি হওয়ার আগে থেকেই গজলডোবা যাতায়াত করেন, তাঁরা জানেন গজলডোবায় শীতকালের একটা আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। আনএক্সপ্লোরড গজলডোবায় শুধু পরিযায়ী পাখি দেখতেই ভিড় করেন প্রচুর পাখিপ্রেমী মানুষ। সাইবেরিয়ান মাইগ্রেটরি বার্ডে ভরে যায় নভেম্বরের শেষ থেকেই। কিন্তু এবার পরিস্থিতি অন্য। অল্প কিছু এলেও বড় সংখ্যায় পাখি নেই। যা চিন্তায় ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। এই মুহূর্তে তরাই-ডুয়ার্সে চলছে পাখি গণনা, সেখানে সংখ্যাতেও উঠে এসেছে অবাক করা তথ্য। কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা আবিষ্কার করেছেন কয়েক মাস আগের ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গতবারের তুলনায় এবছর শীতে গজলডোবায় (Gajoldoba) পরিযায়ী পাখির সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। পাখি গণনায় নিযুক্ত হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (HNAF)-এর কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানিয়েছেন, সদস্যরা গত প্রায় ৩০ বছরের সমীক্ষায় এবারেই গজলডোবায় সবচেয়ে কম পাখি এসেছে বলে জানা যাচ্ছে।  হত বছরও প্রায় ৯ হাজার পাখি এসেছিল বলে রেকর্ড রয়েছে। যা এ-বছর ৩ হাজার পেরিয়েছে মাত্র। গোটা সমীক্ষায় যা কোনওভাবেই ৪ হাজারের বেশি হবে না বলে নিশ্চিত তাঁরা। নতুন করে আর এই মুহূর্তে পাখি আসার সম্ভাবনা নেই। কিছু পাখি এসেও উড়ে গিয়েছে বলে অনিমেষবাবু জানান।

কিন্তু এ বছর পাখিদের গজলডোবা বিমুখ হওয়ার কারণ কী? এ প্রশ্নে বিশেষজ্ঞরা মোটামুটি একমত। প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠন অপ্টোপিকের সভাপতি দীপজ্যোতি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মূল কারণ গত অক্টোবর মাসে ঘটে যাওয়া তিস্তায় বিপর্যয়। সিকিমে হড়পা বানে লোনক লেক ভেঙে তিস্তায় বন্যা হয়েছিল। সেই সময় গজলডোবা এলাকাতেও তিস্তা উপচে পড়ে। আর বন্যার সঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সমস্ত মাছ, প্ল্যাংকটন, শ্যাওলা, মস, ছোট পোকা-মাকড়। যার ফলে খাদ্যশূন্য হয়ে পড়েছে গজলডোবার পাখিবিল। আর তাই পাখিরা আসেনি বা এলেও অন্য় কোথাও চলে গিয়েছে। একই কথা বলেছেন অনিমেষ বসুও। তিনি জানিয়েছেন, মাছ ও জলের সমস্ত পাখির খাবার যোগ্য় জিনিস ভেসে গিয়েছে। পাশাপাশি দুজনেই বলছেন, তিস্তাতেও পলি পড়ে রিভারবেড উঁচু হয়ে গিয়েছে। ফলে পাখিদের জন্য নাব্যতাও খানিকটা কমেছে।

আরও পড়ুন

Advertisement

এদিকে গজলডোবায় কমলেও কাছেই মহানন্দা নদী ও লাগোয়া জলাশয় রয়েছে শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়িতে। সেখানে এবার পাখির সংখ্যা বেড়েছে। প্রতি বছর ৪-৫ হাজার পাখি এলেও এবার ৬ হাজার পাখি এসেছে বলে সমীক্ষায় ধরা পড়েছে। অন্য নদী হওয়ায় এখানে বন্যার প্রভাব পড়েনি তাই গজলডোবার পাখিদের একটা বড় অংশ এখানে চলে গিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। 

গত ৪ অক্টোবর সিকিমে লোনক হ্রদ ভেঙে পড়ে। রিপোর্টে বলা দেখা যাচ্ছে, গত বছর ৮২ প্রজাতির পাখি গজলডোবায় এসেছিল। এবারে সে সংখ্যা কমে ৬৬ হয়েছে। উধাও হয়ে যাওয়া প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে নর্দার্ন পিনটেল, নর্দার্ন সোভেলার সহ বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস, পরিযায়ী বড় পানকৌড়ি। যারা মূলত জলজ শ্যাওলা সহ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ খেয়েই বেঁচে থাকে। এখন প্রকৃতি নিজের প্রক্রিয়াতেই কবে নিজেকে সুস্থ করে তুলবে তার অপেক্ষায় প্রকৃতিপ্রেমীরা।

 

Advertisement