Tea Leaves Problem: গোটা রাজ্যেই তীব্র গরম। দু'দিন ধরে তাপমাত্রা একটু নেমেছে বটে, তবে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড, চা-শিল্পের উপর নেমে এসেছে খাঁড়া। তীব্র গরমে ঝলসে গিয়েছে চা-পাতা। আর সেই ঝলসানো পাতা খেতে হাজির হচ্ছে পোকারা। দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে উত্তরের চা-শিল্প মহলের।
চা-শিল্পের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির মেরুদন্ড। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বারবার আঘাত নেমে আসছে শিল্পে। এমনিতেই উত্তরবঙ্গর পাহাড় এবং তরাই এলাকা চা শিল্পের জন্য আদর্শ। এখানকার জলবায়ু চা চাষের জন্য বিশেষ অনুকূল বলেই এখানে দীর্ঘ বছর ধরে গড়ে উঠেছে চা শিল্প। এই এলাকাতেই মকাইবাড়ি চা শিল্পকে সুনামের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। দার্জিলিংয়ে তবু কিছুটা রক্ষে হলেও ডুয়ার্সের চা গরমে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তরবঙ্গে তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। এতে শুধু ক্ষতি নয়, বিপর্যয়ের মুখে চা চাষ। মূলত চা-চাষের জন্য গড়ে ২০ -২৫ সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে চা পাতা তোলার জন্য এবং শুকনোর জন্য সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। তবে গত কয়েকদিন যেভাবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বিশেষভাবে দার্জিলিং জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ার তাপমাত্রা বাড়ছে এতে অতি তাপমাত্রার কারণে ঝলসে যাচ্ছে পাতাগুলি। তার ওপর গত কয়েক দিনে বৃষ্টির দেখা নেই। এতেই কীটপতঙ্গের উপদ্রবও বাড়ছে। এতে চা গাছের পাতাগুলি 'বানজি' ( চা-তৈরির অযোগ্য) হয়ে যাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে পাতা কমছে চায়ের উৎপাদনও কমছে।
তরাই ইন্ডিয়া প্লান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহেন্দ্র বনসল বলেন, ইতিমধ্যে ফার্স্ট ফ্ল্যাশ চা মার খেয়েছে। সেকেন্ড ফ্ল্য়াশ চা-ও মে মাস থেকে শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মে মাসের বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে এটাও এবার ক্ষতির মুখে। টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার নর্থবেঙ্গল জোনের সেক্রেটারি সুমিত ঘোষ জানান, এমনিতেই উত্তরবঙ্গের চা শিল্প নানা কারণে ক্ষতির মুখে। তার ওপর এই তীব্র গরমে ক্ষতি হচ্ছে চা পাতার। এতে চায়ের গুণগত মানের ক্ষতি হচ্ছে। বিষয়টি কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের নজর দেওয়া উচিত।