scorecardresearch
 

সেফ হোমে দায়িত্ব দেওয়া হলে পালন করবেন? দ্বিধাবিভক্ত শিক্ষক সমাজ

করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্কুলগুলি এখন বন্ধ। ফলে স্কুলগুলিতে সেফ হোম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত, কম জটিল উপসর্গের করোনা রোগীদের এই সেফ হোমে আশ্রয় দেওয়া যেতে পারে। স্কুলগুলিকে সেফহোম করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন। তবে জল্পনা শুরু হয়েছে, শিক্ষকদেরও সেই সেফ হোমের দায়িত্বে আনতে পারে শিক্ষা দফতর। যদি সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে কি তাঁরা পালন করবেন?

Advertisement
সেফ হোম সেফ হোম
হাইলাইটস
  • সেফ হোমে দায়িত্ব দেওয়া হলে পালন করবেন? কী বলছেন শিক্ষকরা?
  • সেফ হোম গড়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষক সমাজ

করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্কুলগুলি এখন বন্ধ। ফলে স্কুলগুলিতে সেফ হোম খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত, কম জটিল উপসর্গের করোনা রোগীদের এই সেফ হোমে রাখা যেতে পারে। স্কুলগুলিকে সেফহোম করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন। তবে জল্পনা শুরু হয়েছে, শিক্ষকদেরও সেই সেফ হোমের দায়িত্বে আনতে পারে শিক্ষা দফতর। যদি সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে কি শিক্ষকরা পালন করবেন? এই প্রশ্নে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত শিক্ষক সমাজ। 

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানালেন, তাঁদের তরফে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের যাতে সেফ হোমের দায়িত্ব দেওয়া না হয়, সেই মর্মে আগাম চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই শিক্ষক নেতার বক্তব্য, 'শিক্ষকদের সেফ হোমে দায়িত্ব দেওয়ার যদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তাহলে তার বিরোধিতা আমরা করব। কারণ, সেফ হোমে শিক্ষকদের কোনও কাজ থাকতে পারে না। তাঁরা শিক্ষক। ডাক্তার বা নার্স নন। আর শিক্ষকরা এমনিতেও বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত রয়েছেন।' 

আরও পড়ুন : Narada Scam: ৫ বিচারপতির বেঞ্চ গঠন হাইকোর্টের, সোমবার শুনানি

স্বপনবাবুর অভিযোগ, রাজ্যে গত দুই এক বছরে  ব্যাঙের ছাতার মতো কিছু ফোরাম গড়ে উঠেছে। যেমন, হেড মাস্টারদের ফোরাম। এই ফোরাম-সহ আরও কয়েকটি ফোরাম শিক্ষকদের সেফ হোমে কাজে লাগানোর কথা বলছেন। অথচ এর কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। তাঁর আরও সংযোজন, 'আমরা সরকারের কাছে এও দাবি জানিয়েছি, সেফ হোম যখন তুলে দেওয়া হবে, তখন যেন স্কুলগুলিকে ভালো করে স্যানিটাইজ করা হয়। কারণ, এই স্কুলগুলিতেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সেন্টার হবে। তাই পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টাও মাথা রাখা দরকার।' 

বিজেপিপন্থী ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেইনড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন। সরকার যদি শিক্ষকদের সেফ হোমে দায়িত্ব দেয়, তাহলেও সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন বলেও জানিয়েছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই। তিনি বলেন, 'আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। রাজ্যে ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতিতে আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছি। শিক্ষামন্ত্রী যদি বলেন, শিক্ষকদেরও এই সেফ হোমে দায়িত্ব পালন করতে হবে, তাহলেও আমরা ঝাঁপিয়ে রাখব। কিন্তু, এক্ষেত্রে আমাদের অনুরোধ থাকবে, শিক্ষকদের নিরাপত্তার দিকটিও বিশেষভাবে দেখার। তাঁদের টিকাকরণের বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবা দরকার। যে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপে আমরা সরকারের সঙ্গেই রয়েছি।' 

Advertisement

আরও পড়ুন : 'শোভনবাবুকে শুধু ব্যবহার করলেন', মমতাকে বিঁধলেন রুদ্র

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় স্বাভাবিকভাবেই সেফ হোম গড়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বললেন, 'শিক্ষকদের সেফ হোমে দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে সরকার এখনও কোনও নির্দেশিকা দেয়নি। সেই নির্দেশিকা দিলে আমরা অবশ্যই তা ভেবে দেখব। কীভাবে বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে বৈঠকে বসলেই একটা সর্বজনগ্রাহ্য সিদ্ধান্তে আসতে পারি। তবে আমাদের মনে হয়, কলেজগুলিতে সেফ হোম গড়া যেতে পারে। '

যদিও বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের মতে, 'শিক্ষক সমাজের বড় অংশ সেফ হোমে নিজেদের যুক্ত করতে চান না। কারণ, এটা তাঁদের কাজ নয়। যে সব ফোরাম সেফ হোমে দায়িত্ব পালনের পক্ষে বলছেন, তাদের সংখ্যাটা নগন্য। তাদের কথা মতো শিক্ষক সমাজ চলবে তা। এটা পরিষ্কার।'  
 

Advertisement