হাওড়ার নিশ্চিন্দার আনন্দনগর থেকে নিখোঁজ সন্তান-সহ দুই গৃহবধূ এবং তাদের দুই প্রেমিককে আটক করল পুলিশ। বুধবার নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার ভোরবেলায় আসানসোল স্টেশনে তাদের ধরে। দিন কয়েক ধরে ওই দুই বধূ এবং সন্তানের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
টাকাপয়সার অভাব বলে
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকা পয়সার অভাব হওয়ায় তাঁরা এ রাজ্যে ফিরছিল। আসানসোল স্টেশনে ট্রেন পরিবর্তন করতে হয়। এটা জানত পুলিশ। সেই মতো তারা ফাঁদ পাতে।
আরও পড়ুন: বক্ষ ঢাকা প্রজাপতি দিয়ে! Kate Sharma বলছেন, 'ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান'
এবং ওদের ধরা হয়। সকলেই আপাতত সুস্থ রয়েছেন। তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে। দিন কয়েক আগে নিশ্চিন্দার আনন্দনগরের কর্মকার পরিবারের তিন জন নিখোঁজ হয়।
আরও পড়ুন: দুনিয়ায় প্রথম! স্কুল পড়ুয়াদের ব্লাড ডোনার্স ক্লাব, নিউ ব্য়ারাকপুরে
গত ১৫ ডিসেম্বর বেলা বারোটায় কেনাকাটি করতে বাড়ি থেকে বেরোনোর পর সেই যে বেপাত্তা হয়ে যায়, তারপর থেকে আর কোনও সন্ধান নেই।
আরও পড়ুন: 'কেন্দ্রীয় বাহিনীই চাই', কমিশনের ওপর চাপ বাড়িয়ে দাবি শুভেন্দুর
অসহায় পরিবার
অসহায় পরিবারের সদস্যরা কখনও থানা, কখনও বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়ি দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। কিন্তু সবটাই নিষ্ফল। কোথায় গেল দুই গৃহবধূ এবং তাদের সাত বছরের সন্তান? কোনও জবাব মিলছিল না। হতবাক বাড়ির লোক, অবাক হয় পুলিশ মহল।
শ্রীরামপুরে
পারিবারিক এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে শেষ বার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন শ্রীরামপুরের রয় এমসি ভাদুড়ি লাহিড়ী স্ট্রিটে পাওয়া গিয়েছিল। পরিবারের লোকজন সেখানে পৌঁছলে কারও হদিস পানি।
আরও পড়ুন: কয়েনের ভাঁড়ার উপচে পড়ছে RBI-র, সামাল দিচ্ছে এই উপায়ে
নিখোঁজ হওয়ার দিন সকালে একটি ফোন নম্বর থেকে বেশ কয়েকবার ফোন আসে ছোট বউয়ের মোবাইলে। পুলিশকে জানানো হলে সেই নম্বরের ঠিকানা বের করে চন্দননগরে পৌঁছলে দেখা যায় সেটি এই পরিবারেরই আত্মীয়র ফোন নম্বার।
শ্রীরামপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে এলাকায় তল্লাশি, সিসিটিভি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। আতঙ্কে আশঙ্কায় পরিবারের লোকজন দিশাহারা।
আরও পড়ুন: রাওয়াতের মৃত্যুতে 'উল্লাস', লালবাজারের ধমকে ডিলিট Facebook পোস্ট
মুর্শিদাবাদ থেকে মুম্বই
শীতের পোশাক কেনার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে তারা মুর্শিদাবাদ চলে যায়। পরিচিত দুই ব্যক্তির কাছে। মাস ছয়েক আগে নিশিন্দার বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসেছিল সুভাষ ও শেখর নামে ওই দুই ব্যক্তি।
তখনই দুই বউয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়। গত পাঁচদিন আগে বাড়ি থেকে কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিল দুই বউ অনন্যা কর্মকার ও রিয়া কর্মকার। সঙ্গে ছিল রিয়ার সাত বছরের সন্তান আয়ূষ।
আরও পড়ুন: দশম-দ্বাদশ পাশেই নৌসেনায় চাকরি, ৪৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন
ফোন বন্ধ
সেদিনই বিকেল থেকে তাদের মোবাইল সুইচ অফ হয়ে যায়। পুলিশ তদন্তে নামে। বড় বউ অনন্যার মোবাইলের কল লিস্টের সূত্র ধরে তদন্তে সাফল্য আসে। কল লিস্টে একটি অচেনা নম্বর থেকে বেশ কয়েকবার ফোন এসেছিল সেদিন।
জানা যায় ওই নম্বর ছিল রাজমিস্ত্রি সুভাষের। মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকায় অভিযান সুভাষের বাড়িতে অভিযান চালায় নিশিন্দা থানার পুলিশ। জানা যায় এখানে একদিন থাকার পর মুম্বই চলে যায় সবাই। মুম্বইয়ের তাদের সঠিক অবস্থান জানার চেষ্টা করছিল পুলিশ।
বিশেষ দল
একটি বিশেষ দল গঠন করে মুম্বইয়ে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে এই গৃহবধূদের পুরনো বাড়ি নতুন করে তৈরি হওয়ার সময় দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে তাঁদের প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার পরেই ঘনিষ্ঠতা এবং তাঁরা নিখোঁজ।