বন্ধ ঘরের ভেতর থেকে দুই বোনের মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে মাকে। তাঁর অবস্থাও সঙ্কটজনক। তাঁকে দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের দুর্গাপুর (Durgapur) থানার বেনাচিতি ভিড়িঙ্গি মোড় সংলগ্ন চাষিপাড়া কয়লা ডিপো এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত দুই বোনের নাম পূজা বাউরি (২০) ও শ্রাবনী বাউড়ির (১৫)। মায়ের নাম সুমিত্রা বাউরি (৪০)। দুর্গাপুরের বেনাচিতি ভিড়িঙ্গি মোড় সংলগ্ন চাষী পাড়া কয়লা ডিপো এলাকায় এক কামরার একটি ঘরে দুই মেয়ে পুজা ও শ্রাবণী বাউরিকে নিয়ে থাকতেন সুমিত্রা বাউরি।
তাঁরা দিনমজুরের কাজ করতেন। অন্য দিনের মতো এদিনে সকালে মা ও দুই মেয়ে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠতেন। কিন্তু শনিবার সকালে মা ও দুই মেয়ে ঘুম থেকে উঠেনি। তাদের ঘরের দরজাও ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। অনেকবার ডাকার পরেও তাদের সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্গাপুর থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে তিনজনকে উদ্ধার করে।
তিনজনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক দুই মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই বোনের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি।
দেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার পরেই মৃত্যুর নিশ্চিত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে বলে এদিন জানান আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা। তবে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, খাদ্যে বিষক্রিয়া বা বন্ধ ঘরের মধ্যে জলন্ত উনুন জ্বেলে রাখায় কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে দুই বোনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
হাসপাতালে ভর্তি সুমিত্রা বাউরি চিকিৎসককে জানান, তাঁরা শুক্রবার রাতে ডাল ও ভাতের সঙ্গে আলু সেদ্ধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তারপর তার আর কিছু মনে নেই। পুলিশ তাদের ঘরের ভেতর থেকে উনুন পেয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে চাষিপাড়া এলাকায়।
এলাকার বাসিন্দা সমীর সরকার বলেন, মা ও দুই মেয়ে এলাকার একটি ঘরেই থাকতেন। তাঁরা দিনমজুরের কাজ করতেন। যখন তিনজনকে ঘরের ভেতর থেকে পাওয়া যায়, তখন তাদের মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিলো। বুঝতে পারছি না, কী করে এই ঘটনা ঘটল।