বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে সোমবার সপ্তাহের শুরু দিন কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল শিলিগুড়ি। শহরের তিনবাত্তি মোড় ও ফুলবাড়িতে গেরুয়া শিবিরের অভিযান ঘিরে তৈরি হয় ব্যাপক উত্তেজনা ৷ পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতে থাকে। এরমধ্যেই উত্তরকন্যা অভিযানে এসে তাদের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করে ভারতীয় জনতা পার্টি। জানা বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছিলেন পুলিশের লাঠির ঘায়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের দলের কর্মী উলেন রায়ের। যদিও পরে গেরুয়া শিবির দাবি করে পুলিশের লাঠিতে নয়, বিজেপি কর্মীর মৃত্য়ু হয়েছে গুলিতে। এই ঘটনায় পুলিসের বিরুদ্ধে এফআইআর হবে বলেও জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। দলীয় কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে বিজেপি। যে বনধের প্রভাব মিশ্রভাবে পড়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। আর এর মাঝেই উলেন রায়ের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট উল্লেখ করে ট্যুইট করল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। যাতে বিজেপির মিছিল থেকেই উলেনকে টার্গেট করা হয়েছে, এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সোমবারই সাফ জানিয়েছিল, কোনও গুলি চালানো হয়নি বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে। আর এদিন সকালে ট্যুইটারে বড় ঘোষণা করল কলকাতা পুলিশ। ট্যুইট করে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ‘শটগানের গুলির আঘাতে জখম হয়ে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।পুলিশ এধরনের শটগান ব্যবহার করে না।' আর এখানেই বিজেপির মিছিল থেকেই উলেনকে টার্গেট করা হয়েছে বলেই ইসারা করতে চাইছে পুলিশ। সোমবার উত্তরকন্যা অভিযানে ধুন্ধুমার নিয়ে সিআইডি তদন্ত করবে বলেও জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
There was a malafide intention to create violence by the use of firearms. CID West Bengal has been asked to investigate. Truth will come out and strong action will be taken against all those who planned and executed the heinous crime. (3/3) pic.twitter.com/8UNdfDoVDH
— West Bengal Police (@WBPolice) December 8, 2020Advertisement
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য ছিল উলেন রায়ের মৃত্যুর কারণ ছররা গুলি। যদিও কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, রবার বুলেট প্রান গিয়েছে গজলডোবার মিলনপল্লীর বাসিন্দা উলেন রায়ের। এদিন ট্যুইটে রাজ্য পুলিশের বক্তব্য, 'মৃত ব্যক্তি শটগানে পেলেট আঘাত পেয়েছিলেন। যা ক্লোজ রেঞ্জ থেকে করা হয়।' পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভ স্থলে উলেন রায়ের কাছাকাছি থাকা কোনও ব্যক্তির শটগানেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
As per the PM report “death was due to the effects of shotgun injuries.” Police do not use shotguns. It’s obvious that during yesterday’s protest in Siliguri, armed persons were brought and they fired from firearms. (1/3)
— West Bengal Police (@WBPolice) December 8, 2020
উত্তরকন্যা অভিযানে ছিল সশস্ত্র বহিরাগতরা, পুলিশের ট্যুইট থেকে সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট হচ্ছে। কড়া ভাষায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ লিখেছে, ‘অস্ত্র ব্যবহার করে হিংসা ছড়ানোই উদ্দেশ্য ছিল। সিআইডি-কে তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছে। এই ঘৃণ্য খুনের পিছনে যারা, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিজেপির মিছিল সশস্ত্র অস্ত্রধারীদের আনা হয়েছিল ট্যুইটে এমনটাই ইঙ্গিত করতে রাজ্য পুলিশ। এদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও রাজ্য সভাপতির অভিযোগ, বিজেপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের হামলার সময় সেখানে তৃণমূলের গুণ্ডারাও সামিল হয়েছিল। এই নিয়ে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি তুলে ধরে ফের একবার বাংলার রাষ্ট্রপতি শাসনের আবেদনও জানিয়েছে গেরুয়া শিবির। এর আগে গত অক্টোবরে বিজেপির নবান্ন অভিযানেও পুলিশের বিরুদ্ধে গাজোয়ারির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি নেতৃত্ব।