শনিবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি নামে শহর কলকাতা, সঙ্গে দমকা হাওয়া। কেবল তিলোত্তমা নয়, ৪০-৫০ কিমি বেগে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হয়েছে হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানেও। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং-এও। রবিবারও রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। এদিন সকাল থেকেই মেঘলা ছিল শহরের আকাশ। হাওয়া অফিস বলছে, বঙ্গে ধেয়ে আসছে দুর্যোগ। চলুন জেনে নেওয়া যাক নতুন সপ্তাহে কেমন থাকতে চলেছে বাংলার আবহাওয়া।
আজ কালবৈশাখীর সম্ভাবনা
দুটি অক্ষরেখা রয়েছে। একটি ওড়িশা থেকে সিকিম পর্যন্ত। ঝাড়খণ্ড, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের ওপর দিয়ে রয়েছে এই অক্ষরেখা রয়েছে। অন্য অক্ষরেখাটি পশ্চিমে মারাঠাওয়াড়া থেকে কর্নাটক পর্যন্ত বিস্তৃত। নতুন করে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ঢুকবে কাল সোমবার এবং বুধবার। এর প্রভাবেই নতুন সপ্তাহে বাংলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আজ, রবিবার আট জেলায় কালবৈশাখীর সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের। মূলত মেঘলা আকাশ, দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি চলবে
চৈত্র মাসের শুরুতেই আবহাওয়া ভোল বদল ঘটেছে বঙ্গে। হাওয়া অফিস নতুন সপ্তাহে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে। রবিবার কলকাতা-সহ দক্ষিণের আটটি জেলায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। হতে পারে শিলাবৃষ্টিও। এদিন কলকাতা-সহ উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে বৃষ্টির পাশাপাশি ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে। রবিবার দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও বৃষ্টি হতে পারে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় বৃষ্টির সঙ্গে হাওয়ার বেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। তবে এই জেলাগুলিতে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। মঙ্গলবারে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ওই দিনের জন্যও আবহাওয়া দফতরের তরফে অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বুধবারের জন্য হলুদ সতর্কতা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। । এ ছাড়া সোমবারও বৃষ্টি চলবে। সব জেলাতেই কমবেশি ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির প্রভাবে জেলায় জেলায় সামান্য কমেছে, তাপমাত্রা আর একটু কমার সম্ভাবনা আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প রাজ্যে ঢুকছে। সেই কারণেই চৈত্রের শুরুতে বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সোমবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রাও কমতে শুরু করবে।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট আপাতত কম থাকবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলার উত্তরের জেলাগুলিতে শুকনো আবহাওয়াই থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে বুধ এবং বৃহস্পতিবার।
কলকাতার আবহাওয়া
আগামী ২৪ ঘন্টায় কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় আকাশ অংশত মেঘলা থাকতে পারে। কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে যথাক্রমে ৩২ ও ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রবিবার বিকেল কিংবা সন্ধ্যার দিকে কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। শিলাবৃষ্টিও হতে পারে কোথাও কোথাও। দমকা ঝোড়ো বাতাস ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগে বইতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা মঙ্গলবার পর্যন্ত। রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি কম। শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৩১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি কম।