ঠিক ৫ বছর আগে আজকের দিনেই মর্মান্তিক এক পথ দুর্ঘটনা হঠাৎই থামিয়ে দিয়েছিল তাঁর যাত্রা। আর সেই সঙ্গেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল বাংলা লোকসঙ্গীত ও সেই সংক্রান্ত গবেষণা। শিল্পীদের অনেকেই বলেন, লোকগানকে আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল তাঁর। আবার তাঁর হাত ধরেই বাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া বেশকিছু লোক সংস্কৃতিকে নতুন করে জানতে পারতেন মানুষ। তিনি লোকসঙ্গীত শিল্পী তথা দোহার-এর (Dohar) প্রাণপুরুষ কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য (Kalika Prasad Bhattacharya)।
২০১৭ সালে ৭ মার্চ অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথেই হুগলির গুড়াপে পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন কালিকাপ্রসাদ। ইহলোক ছেড়ে পাড়ি দেন সুরলোকের পথে। সেই দুর্ঘটনায় আহত হন দোহারের আরও বেশকয়েকজন সদস্য। তবে তাঁরা অবশ্য দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন।
লোকগান কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গেলেও সঙ্গীত জগতে তাঁর প্রবেশ অবশ্য তবলা বাজানোর মধ্য দিয়ে। তবলা ছাড়া অন্যান্য আরও বেশকিছু বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন তিনি।
আর শুধু তাই নয় কণ্ঠ সঙ্গীতেরও প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন কালিকাপ্রসাদ। লোকগানের পাশাপাশি উচ্চাঙ্গসঙ্গীতেও ছিল তাঁর সমান দখল। এমনকি দীর্ঘদিন বিভিন্ন উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পীর সঙ্গে হারমোনিয়ামও বাজিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন - দ্বাদশ শ্রেণিতে মাত্র ২৪ নম্বর পেয়েও UPSC-তে উত্তীর্ণ, IAS অফিসারের ট্যুইট VIRAL
কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের জন্ম অসমের শিলচরে (Assam Silchar)। ছোটো থেকেই সঙ্গীতের প্রতি ছিল প্রবল আগ্রহ। পরে তিনি চলে আসেন কলকাতায়। ভর্তি হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কাকা অনন্ত ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর তাঁর বিপুল গানের সম্ভার নিয়ে কাজ করা শুরু করেন কালিকাপ্রসাদ। একটা সময় গড়ে তোলেন দোহার। তবে শুধু দোহারেই নিজেকে সীমাবন্ধ রাখেননি কালিকাপ্রসাদ। চালিয়ে গিয়েছেন এই সংক্রান্ত গবেষণা। করেছেন প্লে ব্যাক। দিয়েছেন সুর। আর সমস্ত ক্ষেত্রেই রেখেছেন দক্ষতার পরিচয়।
সেক্ষেত্রে এহেন শিল্পীর অকাল প্রয়াণ বাংলা লোকসঙ্গীতের অপূরণীত ক্ষতি বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বাংলার লোকগান তথা লোক সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি যে উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন কালিকাপ্রসাদ, তাঁর প্রয়াণের পর সেই কাজ নিরলশভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন দোহারের অন্যান্য সদস্যরা। (সমস্ত ছবি সূত্র-ফেসবুক)