Advertisement

Aindrila Sharma Exclusive: কঠিন লড়াইয়ের অবসান! ক্যান্সারকে হারিয়ে, আগামী বছরই কাজে ফিরবেন ঐন্দ্রিলা

Aindrila Sharma Exclusive: শরীরে ফের থাবা বসিয়েছিল ক্যান্সার। দীর্ঘ লড়াই করে অবশেষে মারণ রোগকে যেন 'চেকমেট' বললেন তিনি। আজতক বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে শারীরিক অবস্থা থেকে কাজে ফেরার খুঁটিনাটি শেয়ার করলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। 

অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মাঅভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা
সৌমিতা চৌধুরী
  • কলকাতা,
  • 30 Dec 2021,
  • अपडेटेड 3:56 PM IST
  • ভাল আছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা।
  • দাঁতে দাঁত চেপে আরও কঠিন লড়াই করেছেন অভিনেত্রী।
  • সঙ্গে রয়েছেন সাপোর্ট সিস্টেম সব্যসাচী ও পরিবার।

"অউর হারকে জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর ক্যাহতে হ্যায়..." বলিউড বাহশাহের সংলাপ ধার করে বলতে গেলে তিনি 'বাজিগর'। তবে এক্ষেত্রে একটু পার্থক্য আছে, কারণ তিনি কখনও হারেননি। পড়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু গা ঝেড়ে আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন। কথা হচ্ছে, জনপ্রিয় ধারাবাহিক 'জিয়ন কাঠি' (Jiyon Kathi)-র জাহ্নবী চ্যাটার্জী ওরফে ঐন্দ্রিলা শর্মাকে (Aindrila Sharma) নিয়ে। বছরভর দীর্ঘ লড়াইয়ের পর, বর্ষশেষে হাসিমুখে এই লড়াকু অভিনেত্রী।   

শরীরে ফের থাবা বসিয়েছিল ক্যান্সার (Cancer)।  দীর্ঘ লড়াই করে অবশেষে মারণ রোগকে যেন 'চেকমেট' বললেন ঐন্দ্রিলা। ২৯ তারিখ নিলেন শেষ কেমোথেরাপি। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ। তবে মেনে চলতে হবে কড়া ডায়েটচার্ট ও কিছু গাইডলাইন। ঘরোয়া ভাবেই কেক কেটে করলেন জয়ের উদযাপন। আজতক বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে শারীরিক অবস্থা থেকে কাজে ফেরার খুঁটিনাটি শেয়ার করলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। 

টেলিফোনের ওপার থেকে হাসি মুখ যেন প্রতিফলিত হচ্ছে গলাতেও। ঐন্দ্রিলা বললেন, "এখন অনেক ভাল আছি। এতদিন পর মনটা খুব খুশি লাগছে। কালই কেমোথেরাপি শেষ হয়েছে। তবে ডায়েটে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিছু শরীরচর্চা দিয়েছেন আমার চিকিৎসকেরা, সেগুলো মেনে চলতে হবে। আর একমাস পড়ে আবার রেগুলার চেকআপের জন্য যেতে হবে।" 

আরও পড়ুন

 

তাহলে কী নতুন বছরেই ফ্লোরে ফিরছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানালেন, "শরীরটা এখনও দুর্বল রয়েছে। নিজেকে আরও একটু গুছিয়ে নিয়ে তারপর কয়েক মাসের মধ্যেই ফ্লোরে ফিরব। আশা করি, সব ঠিক থাকলে দর্শকরা আগামী বছরই পর্দায় আবার দেখতে পাবেন আমায়।" 

 

২০২১ সালটা ছিল অত্যন্ত কঠিন। কার্যত, ঝড় বয়ে গেল। তবে বর্ষশেষে ভাল খবর। কী কী শিক্ষা পেলেন, এই বছরটা থেকে? নতুন বছরের থেকে প্রত্যাশা কতটা? ঐন্দ্রিলা জানালেন, "এত বড় লড়াই যখন করতে হয়, তখন আলাদা করে শেখার কিছু নেই। আসলে সময়ই সবটা শিখিয়ে দেয়। আমি বরাবর সবকিছু গ্রহণ করতে পছন্দ করি। সব বাধা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত এই দিনটা দেখতে পেলাম, এটাই সবচেয়ে বড় শান্তি আমাদের জন্য।" 

 

 

তিনি আরও যোগ করলেন, "২০২১ সালটা বলা যেতে পারে আমার কাছে বিভীষিকার মতো ছিল। তবে বছরটা কাটিয়ে উঠলাম। আশা করছি নতুন বছরে আবার নতুন ভাবে শুরু করতে পারব সমস্ত পজিটিভিটি নিয়ে।" 

ঐন্দ্রিলার কথায়, "ক্যান্সার বা যে কোনও রোগ শুধু শারীরিক কষ্ট নিয়ে আসে না। মানসিক অনেক কষ্ট নিয়ে আসে। ডিপ্রেশন ও আরও অনেক কিছু একসঙ্গে আসে। বিশেষ করে কেমোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবেই দেখা যায় ডিপ্রেসন সব থেকে বেশি হয়। এখানে আমার পরিবার, সব্যসাচী ও কিছু কাছের বন্ধুকে যেভাবে সব সময় পাশে পেয়েছি যদি তা না পেতাম, তাহলে হয়তো কালকের দিনটা আমি দেখতে পেতাম না। ওঁদের কথা আমি যতই বলব ততই কম।" 

 

 

দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান। উদযাপনের দিন 'টাইগ্রেস' ঐন্দ্রিলার জন্য কেক পাঠিয়েছিলেন তারকা জুটি রাজ চক্রবর্তী ও শুভশ্রী গাঙ্গুলীও। এছাড়াও শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন আরও একাধিক তারকারা। এই প্রসঙ্গে তিনি বললেন, " যেহেতু এই রোগের চিকিৎসা অনেকটা দীর্ঘ সময়ের। তাই সাধারণত একটা সময়ের পর খোঁজ নেওয়াটা শিথিল হয়ে যায়। বা নিজেদের জীবনের ব্যস্ততায় খোঁজ নিতে ভুলে যায় অনেকে। তবে কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা নিয়মিত আমার খোঁজ নিয়েছেন। প্রতিটা কেমোর পর আমার শরীর কেমন আছে জানতে চেয়েছেন। অপারেশন, রেডিয়েশন এমনকী গোটা সময়কালটাতে খবর রেখেছেন আমার। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁরা সব সময় পাশে থেকেছেন মানসিকভাবে। এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওনা।   

 

     
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের সরস্বতী পুজোর ঠিক আগের দিন কাঁধের ব্যথা শুরু হওয়ার পরই ঐন্দ্রিলার পরিবার আর দেরি করেননি। তড়িঘড়ি ফেব্রুয়ারি মাসেই ঐন্দ্রিলা ভর্তি হয়েছিলেন দিল্লির এক প্রাইভেট হাসপাতালে। সেখানে ফের ক্যান্সার ধরা পড়ে তাঁর। প্রথম কেমো নেওয়ার পরই ফের নারী দিবসের দিনই কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি। কয়েকদিনের অন্তরে দ্বিতীয় ও তারপর তৃতীয় কেমো! প্রথমে লম্বা চুল কেটে একেবারে ছোট করেছিলেন, ফের একেবারে সেটুকুও রাখেননি।

 

 

এর আগেও প্রায় ৬ বছর আগে ২০১৫ সালে শিরদাঁড়ার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। প্রায় দেড় বছর কঠিন লড়াইয়ের পর সুস্থ হয়েছিলেন তিনি। আবার সেই দুঃস্বপ্নের দিনগুলি ফিরে এসেছিল তাঁর জীবনে। এইবার কাঁধে সাংঘাতিক ব্যথা হওয়ার পর একের পর এক টেস্ট করতে হয় তাঁকে। রাজধানীর হাসপাতালে তাঁর ডান দিকের ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে। 

 

একাধিকবার ঝুঁকিপূর্ণ সার্জারির পর চলেছে কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন। তবুও মুখের হাসি কখনও অমিল হতে দেখেননি কাছের মানুষেরা। উল্টে দাঁতে দাঁত চেপে আরও কঠিন লড়াই করে গিয়েছেন ঐন্দ্রিলা। আর সঙ্গে ছিলেন পরিবার, কাছের বন্ধুরা ও ছায়াসঙ্গী, সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury) অর্থাৎ ছোটপর্দার বামাক্ষ্যাপা। 

বর্তমানে সুস্থ ঐন্দ্রিলা। আর এটাই এতদিন ধরেছিল তাঁর পরিবার-পরিজন, অনুগামীদের প্রার্থনা। এখন সকলের অপেক্ষা, একেবারে ফিট হয়ে, হাসি মুখেই আবার নিজের জায়গায় অর্থাৎ শ্যুটিং ফ্লোরে তাঁর ফেরার।  


 

Read more!
Advertisement
Advertisement