কোভিডের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সিনেমা হল- মাল্টিপ্লেক্স। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে সিনেমা হল খোলার অনুমতি মিলেছে। বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের এই স্বস্তির সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও একটি খুশির খবর। এই মাসেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে বিরসা দাশগুপ্তের (Birsa Dasgupta) ছবি 'মুখোশ' (Mukhosh)।
'ড্রাকুলা স্যার'- এর সাফল্যের পর ফের সাইকোলজিকাল (Psychological) ছবিতে অভিনয় করছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)। যদিও দুটো ছবি একেবারে ভিন্ন ধারার বলে মনে করেন অভিনেতা। এসভিএফ (SVF)-র ব্যানারে তৈরি এই ছবির ট্রেলার কিছুদিন আগেই সামনে এসেছে। আজতক বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে ছবি নিয়ে খুঁটিনাটি শেয়ার করলেন অনির্বাণ।
নিজের ইমেজ থেকে বেড়িয়ে কিছুটা অন্যরকম চরিত্র বর্তমানে বেছে নিচ্ছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। এই ছবিতে কতটা আলাদা রূপে দর্শকরা পাবেন তাঁকে? অভিনেতা জানালেন, "এর আগে আমি যে ধরণের কাজ করেছি তার মধ্যে, 'ব্যোমকেশ' বা 'ফেলুদা'-র মতো সমস্ত চরিত্রগুলিতে 'লার্জার দ্যান লাইফ' বা সুপার হিরোয়িক যে এলিমেন্টগুলো রয়েছে, সেটা ছেড়ে একজন সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে অসাধারণ কিছু তুলে ধরা, এই জিনিসটা একটা নতুন লেয়ার তো বটেই একটা নতুন চরিত্র হিসাবেও। তাই ভাল লেগেছে কাজটা করতে।"
তিনি যোগ করলেন, "তবে এর আগে করা 'বিবাহ অভিযানে' চরিত্রটা যতটা ভেঙেছিল, এই ছবিতে যে ততটা ভাঙছে তা কিন্তু নয়। বরং আমি বলবো একটা সিরিয়াস ছবিতে, একটা সিরিয়াস চরিত্র এটা। যার মধ্যে নতুনত্ব আছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। গোয়েন্দা না হয়েও এই ছবিতে আমার কাজ গোয়েন্দাগিরি।"
অনির্বাণের কথায়, "বিরসা দা আমায় বলেছিলেন, চরিত্রটা একদম সাধারণ। যাকে দেখে মনে হয়, এর মধ্যে কোনও গুণ নেই। আমার মধ্যে একজন ছাপোষা ছেলেকে দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। যার মধ্যে কোনও এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু নেই। কিন্তু সে একটা অসাধারণ ঘটনার মধ্যে ঢুকে কীভাবে নিজের ছাপ রাখছে, সেটাই এই চরিত্র এবং ছবির মাধ্যমে দেখাতে চেয়েছি আমরা। আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি চরিত্রটা করার।"
গত কয়েক বছর ধরে বাংলা ছবি কিংবা ওয়েব সিরিজে ডার্ক ঘরানার গল্পের ট্রেন্ড অনেকটাই বেশি। সেই প্রসঙ্গে অনির্বাণ বললেন, "এখন মানুষ এই ধরণের কাজ দেখতে পছন্দ করছে। বিশেষত ওয়েব প্ল্যাটফর্ম এসে এই প্রবণতা অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। একটা ক্যাট অ্যান্ড মাউস, খুনের রহস্য বা একজন আরেকজনকে ধরতে চাইছে, এই ধরণের গল্পের ক্ষিদের জন্য ওয়েব কনটেন্ট অনেকটাই দায়ি বলে আমার মনে হয়। যদিও বাংলা ছবিতে অনেক ভাল ভাল থ্রিলার হয়েছে, তবুও সেই ট্রেন্ডটা এখনও আছে।"
'মুখোশ'-এ একজন রেসিডেন্ট ক্রিমিনোলজিস্ট (Resident Criminologist ) কিংশুকের চরিত্রে অভিনয় করছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে অনির্বাণ চক্রবর্তী, চান্দ্রেয়ী ঘোষ এবং কৌশিক সেনের মতো অভিনেতাদের। একের পর এক সামনে আসছে খুন, রক্ত, প্রতিশোধ ও উন্মোচন হচ্ছে সত্যি। কলকাতা পুলিশের আওতাধীন এক ভয়াবহ খুনের মামলার সঙ্গে যুক্ত হয় অনির্বাণ ভট্টাচার্য। অন্যান্য তদন্তকারী অফিসারদের (চান্দ্রেয়ী ঘোষ এবং অনির্বাণ চক্রবর্তী) সঙ্গে রোমাঞ্চকর সত্যের খোঁজে কাজ শুরু করেন তিনি। প্রশ্ন ওঠে খুনি মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন না স্থিতিশীল?
ভেড়ার মুখোশ পরে সে পুলিশের চোখে ধুলো দেয় বারবার। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের মনে হয়, তাঁরা খুনিকে অনুসরণ করছেন না, বরং উল্টে খুনি তাঁদের অনুসরণ করাচ্ছেন। ধীরে ধীরে সামনে আসে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ও সত্যি। মুখোশের আড়ালে অন্ধকার না অন্ধকারের আড়ালে কোনও মুখোশ? এই প্রশ্ন ট্রেলার দেখেই জাগে মনে। মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে আছে আততায়ীর পরিচয়। কে খুলবে এই রহস্যের জট? এই উত্তর দর্শকেরা পাবেন খুব শীঘ্রই। আগামী ১৯অগাস্ট মুক্তি পাবে 'মুখোশ'।