যে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ রোগটিকে সংক্রমক করে দিচ্ছিল সেই SARS-CoV-2কে প্রাথমিকভাবে বায়ুবাহিত মনে করা হচ্ছিল না। যদিও সেই বৈজ্ঞানিক তথ্য খারিজ হল ল্যানসেট (Lancet)জার্নালে। আগের প্রকাশিত রিপোর্টে এই ভাইরাসকে বলা হয়েছিল 'বায়ুবাহিত প্যাথোজেন'। কিন্তু বর্তমানে ১০টি বৈজ্ঞানিক কারণ রাখা হয়েছে যা থেকে স্পষ্ট যে 'বায়ুকে মাধ্যম করেই এই SARS-CoV-2 মানব দেহে ছড়িয়ে পড়ছে।'
এই পেপারটি লিখেছেন ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ছ'জন গবেষক। সেই জার্নালে বলা হয়েছে যে, 'এই প্যাথোজেন বায়ুবাহিত নয়, এই যুক্তি দেওয়ার নেপথ্যে কোনও যথেষ্ট প্রমাণ নেই। বরং সব বৈজ্ঞানিক প্রমাণ থেকে উল্টো তথ্য স্পষ্ট।" এরপরই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কোভিড-১৯ সুরক্ষা বিধি দ্রুত পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন।
দেখে নেওয়া যাক সেই ১০টি কারণ, যার উপর ভিত্তি করে গবেষকরা এই ভাইরাসকে বায়ুবাহিত বলছেন-
১। যেভাবে SARS-CoV-2 'সুপারস্প্রেডার' হয়ে উঠছে তা থেকে এটা স্পষ্ট এই ভাইরাস মিউকাসবাহিত কেবল নয়। মানুষের আচরণ, কথা বলার মাধ্যম, বদ্ধ ঘর থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ এর প্রাথমিক প্রমাণ।
আরও পড়ুন, 'আর্সেনিক অ্যালবাম করোনায় কাজ করে কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না'
২। প্রকাশিত পেপারে বলা হয়েছে, এক ঘরে না থাকলেও কোয়ারেন্টাইন হোটেলে পাশাপাশি ঘরে থেকেও করোনা সংক্রমিত হয়েছে। অর্থাৎ লং-রেঞ্জ ট্রান্সমিশন হচ্ছে। যা কেবল বায়ুবাহিত হলেই সম্ভব।
৩। গবেষকরা জানান ৩৩ শতাংশ থেকে ৫৯ শতাংশ কেসে উপসর্গহীন কিংবা প্রাথমিক উপসর্গ রয়েছে সেই সকল কোভিড আক্রান্তদের থেকেই সংক্রমণ হয়েছে। যাদের হাঁচি কিংবা কাশিও হয়নি। এই ক্ষেত্রে প্রমাণ অনেকটাই স্পষ্ট
৪। বাইরে যারা বেরোচ্ছেন তাদের থেকে বদ্ধ ঘরে যারা রয়েছে তাদের SARS-CoV-2 আক্রমণ বেশি করেছে।
৫। জার্নালে এও বলা হয় স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই কিট পরে থাকলেও তারা আক্রান্ত হচ্ছে এই ভাইরাসের 'নসোকমিকাল ইনফেকশনের' মাধ্যমে।
৬। পরীক্ষাগারে দেখা গিয়েছে SARS-CoV-2 ভাইরাস বাতাসে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকছে।
আরও পড়ুন, জ্বর মানেই করোনা নয়! কী কী লক্ষণ দেখলে বুঝবেন?
৭। আরও দেখা গিয়েছে যে হাসপাতালে এয়ার ফিল্টার মেশিন কিংবা পাইপলাইনেও এর অস্তিত্ব মিলেছে।
৮। খাঁচায় বন্দি এমন প্রাণীদের বায়ুথলিতে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে, যা থেকে বায়ুবাহিত তথ্যর প্রমাণ পাওয়া যায়।
৯। SARS-CoV-2 ভাইরাস বায়ুবাহিত নয় এমন কোনও জোরালো প্রমাণ বৈজ্ঞানিকভাবে পাওয়া যায়নি
১০। এমনকী এই ভাইরাসের ফুসফুসে আক্রমণের পথ থেকেও এর বায়ুবাহিত তথ্যর যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।