সিকিমের বন্যা যে কতটা ভয়াবহ, তা বোঝানোর জন্য় কয়েকটি ছবিই যথেষ্ট। ১৭,১০০ ফুট উচ্চতায় দক্ষিণ লোনাক হ্রদের মুখের দেয়াল ভেঙে গিয়েছে। এই প্রাচীরকে 'মোরাইন' বলা হয়।
লেকের অতিরিক্ত জলের কারণে এই দেওয়াল ভেঙে গিয়েছে। দু'টি স্যাটেলাইট ছবির মাধ্যমে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি উঠে এসেছে। এই ছবিগুলো ম্যাক্সার-এ তোলা। এর আগে ISRO-ও স্যাটেলাইটে তোলা ছবি প্রকাশ করেছিল।
দক্ষিণ লোনাক হ্রদের গ্লাসিয়াল হৃদ এমনিতেই নড়বড়ে পরিস্থিতিতে ছিল। যে কোন সময়ে আউটবার্স্ট বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে, জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।
মাত্র দুই বছর আগেই, আইআইটি রুরকি এবং আইআইএসসি বেঙ্গালুরুর তিনজন বিজ্ঞানী এটি যে কোনও সময়ে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
উপরের ছবিটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির। এতে লেকের বাম দিকে লোনাক হিমবাহের নিচের অংশটি দৃশ্যমান। লেকের চারপাশে মোরাইন( মাটি আর পাথরের পুরু দেয়াল) দেখা যাচ্ছে।
জলের উপরে বরফের একটি পাতলা স্তর রয়েছে। তাতে ফাটলও রয়েছে। যেখানে মোরাইন ভেঙেছে সেটিও দেখা যাচ্ছে। তখনও মোরাইন পর্যন্ত জল পৌঁছায়নি।
আরও একটি ছবি হ্রদ ভাঙার দুই দিন পর তোলা। মানে ৬ অক্টোবর ২০২৩। হিমবাহের বরফও দেখা যাচ্ছে। লেকের জলের স্তরও কম। বরফের পাতলা চাদর ভেঙে গিয়েছে।
ডানদিকে তীরের কাছে মোরাইন ভেঙে গেছে। ৩-৪ অক্টোবর রাতে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে লেকের জলের স্তর বাড়তে থাকে।
জল, তুষার এবং কাদা বয়ে এসে ৬২ কিলোমিটার দূরে চুংথাং বাঁধ পর্যন্ত এসে যায়। সেই বাঁধ এত জলের চাপ সহ্য করতে পারেনি। সেটিও ভেঙে পড়ে।
দক্ষিণ লোনাক হ্রদ একটি প্রগ্ল্যাসিয়াল হ্রদ। অর্থাৎ হিমবাহের গলে তার থেকে যে জল বের হয়, তার থেকেই এই হ্রদ সৃষ্টি হয়েছে। মোরাইন ছিল প্রায় ১৬.৩ মিটার উঁচু। অর্থাৎ প্রায় ৫৪ ফুট উঁচু। সহজ হিসাবে প্রায় ৫ তলা উঁচু বাড়ির সমান।