গোয়ায় ধাক্কা খেল তৃণমূল কংগ্রেস। চার মাস ঘুরতে না ঘুরতেই দল ছাড়লেন সে রাজ্যের প্রাক্তন বিধায়ক লাবু মামলেদার। দল ছেড়েই ক্ষান্ত হননি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ইস্তফাপত্রে তৃণমূলকে সাম্প্রদায়িক দল বলে দেগে দিয়েছেন লাবু। পাশাপাশি নাম না করে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন। তাঁর দাবি, গোয়ায় প্রচারের জন্য যে সংস্থা আপনি ভাড়া করেছেন, তারা গোয়ানদের বিভ্রান্ত করছে। মানুষের ভাবাবেগ বুঝতে পারছে না।
শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে তৃণমূলকে থেকে পদত্যাগ করেছেন লাবু। মমতাকে পাঠানো পত্রে আইপ্যাক-কে নিশানা করেছেন তিনি। লিখেছেন,''গোয়ায় প্রচারের জন্য যে কোম্পানিকে নিয়োগ করেছেন তারা গোয়ানদের ভাবাবেগ বোঝে না। বরং তাঁদের বোকা বানাচ্ছে।'' গোয়ার প্রতিটি পরিবারের গৃহকর্ত্রীকে ৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতার 'গৃহলক্ষ্মী' প্রকল্প ঘোষণা করেছে তৃণমূল। এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা অসম্ভব বলে মনে করেন লাবু। তাঁর কথায়,''পরাজয় নিশ্চিত হলে লোকে এসব ভুলভাল প্রতিশ্রুতি দেয়। মানুষকে বোকা বানায় যে দল তার অংশ হব না আমি।''
চিঠিতে তাঁর দাবি, গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পের আড়ালে তথ্য সংগ্রহ করছে আইপ্যাক। তাদের কাছে তৃণমূলস্তরে কোনও তথ্যই নেই। বাংলার মহিলাদেরই উন্নতি করতে পারেনি তৃণমূল। তারা গোয়া মা-বোনেদের মঙ্গল করতে পারবে না বলেই মনে করি।
গোয়ায় অতিসম্প্রতি মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির (এমজিপি) সঙ্গে জোট করেছে মমতার দল। সেই প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে সাম্প্রদায়িক দল বলে অভিহিত করেছেন লাবু। মমতাকে দেওয়া ইস্তফাপত্রে তিনি লিখেছেন,''সুদিন ধাবালিকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোয়ায় ধর্মের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে তৃণমূল। আসলে মেরুকরণ করে হিন্দু ভোটকে এমজিপি-র দিকে পাঠাতে চাইছে আর ক্যাথলিক ভোট নিজের দিকে আনার কৌশল। গোয়ানদের বিভাজন করতে চাইছে যে দল তাদের সঙ্গে থাকব না। তৃণমূলকে গোয়ার সম্প্রীতি নষ্ট করতে দেব না।''
আরও পড়ুন- উপনির্বাচনের পর পুরভোটের জনাদেশেও কংগ্রেস-ত্যাগেই লাভ CPM-র!
সংবাদ সংস্থাকে লাবু বলেছেন,''বাংলায় বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সাফল্য ও হাইকম্যান্ড সংস্কৃতির বাইরে বেরিয়ে তাঁর ভাবনা দেখে তৃণমূলে যোগ দিই। এমজিপি-র সঙ্গে হাত মেলানোর পর সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি লক্ষ্য় করলাম।''
বলে রাখি, গত সেপ্টেম্বরে গোয়ায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুজিনহো ফেলেরিওর সঙ্গে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক লাবু। ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এমজিপি-র বিধায়ক ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা, গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে মা-বাবা