গত বছর নভেম্বর মাসের শেষেই দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে উত্তরপ্রদেশে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন প্রণয়ন হয়। ধর্মান্তর করে বিয়ে রুখতে একই পথে এগেয়িছে উত্তারখণ্ডও। অদূর ভবিষ্যতে বিজেপি শাসিত আরও একাধিক রাজ্য এই আইন আনার ব্যাপারে তোরজোর শুরু করে দিয়েছে। তখন ময়দানে নামল দেশের শীর্ষ আদালত। এই আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখবে স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট। সেই করাণে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড সরকারকে নোটিস পাঠাল শীর্ষ আদালত। তবে এই আইনের উপর এখনই স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট।
ভিন্ন ধর্মে বিয়ের পর জোর করে ধর্ম পরিবর্তনের ঘটনা রুখতে আইন তৈরি করেছে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড সরকার। সেই আইনের বৈধতা এবং আইনের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার অভিযোগে সুমামলা করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিটিজেন ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস। অন্যদিকে এই আইনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী তিস্তা সেলভেস্তা এবং বিশাল ঠাকরে। পিটিশনে দাবি করা হয়, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে পাস হওয়া এই আইন সমাজ ও সংবিধানের চরিত্র বদলে দিতে পারে। এমনকী, সমাজের এক শ্রেণির মানুষ এই আইনকে হাতিয়ার করে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিতে পারে। তাই এই আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, হরিয়ানা এবং অসমের মতো রাজ্যও যে ‘লাভ জিহাদ’ আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে, তা পিটিশনে জানানো হয়। কিন্তু তাঁদের সেই আর্জি এদিন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। এখনই স্থগিতাদেশ জারি করছে না শীর্ষ আদালত। তবে দুই রাজ্যকে নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে তার জবাব তলব করা হয়েছে।
গত নভেম্বর মাসে যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে কার্যকর হয়েছে লাভ জেহাদ আইন। নতুন আইন অনুযায়ী সে রাজ্যে বিয়ের জন্য কোনও মহিলার ধর্মান্তকরণ করা হলে তা ‘অকার্যকর’ ঘোষিত হবে। পাশাপাশি, বিয়ের পরে ধর্ম বদলাতে চাইলে জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানাতে হবে। কোনওরকম প্রতারণা, প্রলোভন দেখিয়ে অথবা জোর করে ধর্মান্তকরণ করালে অভিযুক্তের ৩ থেকে সর্বাধিক ১০ বছরের সাজা হতে পারে। দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা জরিমানাও। অন্যদিকে কিছুদিন আগেই লাভ জিহাদ বিরোধী বিল পাস করেছে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহানের সরকারও। তাতে জোর করে ধর্মান্তকরণে বিরুদ্ধে কড়া সাজার কথা বলা হয়েছে। রয়েছে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। সঙ্গে মোটা টাকা জরিমানা গুনতে হবে দোষীকে। বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন বসার আগেই এই বিল পেশ করে মন্ত্রিসভা।